সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মিটিং শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। তাদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার অধিকাংশ দাবি মেনে নিলেও কিছু কিছু বিষয়ে এখনও পরিষ্কার না হওয়ার সন্তুষ্ট হতে পারছেন না তারা।
একজন ডাক্তার বলেন,' কিছু জিনিস নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কিন্তু বাকি জিনিস নিয়েই বিস্তারিত বহু জিনিস নিয়ে আলোচনা হয়নি। যেগুলো নিয়ে দাবি মানা হয়নি যেগুলোর ডিটেইল আমরা ধর্ণা মঞ্চে বলবো।'
তবে এই পুরো ঘটনায় সবার নজর ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। আলোচনা শেষে মাঝ রাতে সংবাদ সম্মেলন করে শুরুতে সবার কাছে আবারও ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী। ঘোষণা দেন, কোনো ধরনের শর্ত ছাড়াই শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি মেনে নেয়া হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা উভয়পক্ষই খুশি যে আমরা এতক্ষণ ধরে বিস্তারিত আলোচনা করতে পারলাম বলে। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছি। এটাও ঠিক আমরা কিন্তু বিএমই বা ডিএইচএসকে অসম্মান করিনি। কিন্তু ওদের বিরুদ্ধে যেহেতু চিকিৎসকদের ক্ষোভ আছে এবং তাই ওদের দাবি মেনে নিয়ে এই দু'জনকে সরানোর সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৪টার মধ্যে ঘোষণা করা হবে কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনারের নাম। সরানো হবে নর্থের ডিসিকেও। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আরও বেশ কিছু রদবদলের ঘোষণা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বের হয়ে সরাসরি স্বাস্থ্য ভবনের ধর্ণা মঞ্চের দিকে যাত্রা করে ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল। সেখান সহকর্মীদের সাথে আলোচনার পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন আন্দোলনকারীরা।
এদিন, বৈঠকের শুরুতে ৫ দফা দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বৈঠকটি শেষ হয় দু'ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় রাত ৯টায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে জুনিয়র চিকিৎসকরা অবস্থান করেন রাত ১২টা পর্যন্ত।
তবে মমতার সাথে শিক্ষার্থীদের এই আলোচনাকে একেবারেই ভালো চোখে দেখছেন না বিরোধীরা। রাজ্যের বিরোধীদলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই ঘটনার জন্য দায়ী, তার সাথে বৈঠক অর্থহীন।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'আপনারা যার সঙ্গে মিটিং করছেন তিনি এই ঘটনার জন্য দায়ী, তালা থানার ওসি গ্রেপ্তার হওয়ার পরে এবং আজকে যে ফরওয়ার্ডিং দিয়েছে সিবিআই তাতে বলেছে পুলিশ এভিডেন্স নষ্ট করেছে।'
বিশ্বকর্মা পূজার দিন মঙ্গলবার মামলার তৃতীয় শুনানির দিন প্রতীকী কালো ঘুড়ি উড়িয়ে প্রতিবাদ চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আর আলোচনার মাধ্যমে ডাক্তারদের কর্মক্ষেত্রে ফেরাতে মরিয়া রাজ্য সরকার। শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ের পর কোনদিকে গড়ায় গণ-আন্দোলনের জোয়াড়- এখন সেদিকে নজর গোটা ভারতের।