আরজি কর কাণ্ড বদলে দিয়েছে কলকাতা শহরের চিরচেনা দৃশ্যপট। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এখনও দেয়া ব্যারিকেড। গেলো ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যঅর ঘটনার পর থেকে এই শহরে র্যালি হয়েছে তিন শতাধিক। এরমধ্যে বেশিরভাগই মধ্যরাতে নারীদের অংশগ্রহণে রাজপথে বিক্ষোভ।
আরজি কর ইস্যুতে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে শুরু থেকে রাজ্য সরকারের উদাসীনতার কারণে এক মাসেরও বেশি সময় পর ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হেফাজতে আছেন মাত্র দুইজন। ঘটনা তদন্তে কেন্দ্রীয় সরকারের এই গাফিলতির বিরোধিতা করে পুরোটা সময় বিক্ষোভ করে আসছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সব শ্রেণি পেশার মানুষ। এই বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুলেছেন বিজেপি নেতা ও অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীও।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবান্নে বুধবার চিকিৎসকদের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডক্টরস ফোরাম বলছে, অন্য কারো সঙ্গে নয়, বৈঠক হবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে, যেটি গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে। বৈঠকে থাকবে তাদের ৩০ জন প্রতিনিধি। সরকার এই দাবিতে সম্মতি না জানানোয় শেষ পর্যন্ত হয়নি বৈঠক। রাতভর স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
এই বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য্য জানান, কোনো ধরনের শর্ত ছাড়া আলোচনায় বসতে হবে জুনিয়র চিকিৎসকদের। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করা হচ্ছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কাজে যোগ না দিয়ে আরজি কর কাণ্ডে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন পশ্চিমবঙ্গের জুনিয়র চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। নির্দেশনা অমান্য করেই চলছে বিক্ষোভ। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম, আরজি করের সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ করের বিরুদ্ধে জোর তদন্ত ও তাকে বিচারের আওতায় আনা, কলকাতা পুলিশ প্রধান ভিনিত গোয়েলের পদত্যাগ ও প্রতিটা সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার আর জুনিয়র চিকিৎসকরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় চলমান এই বিক্ষোভ আর কর্মবিরতি নিয়ে আসছে না কোনো সুরাহা।