গেলো কয়েকদিন ধরে বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধিত আইন নিয়ে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। এর মধ্যেই আগুনে ঘি ঢাললেন যোগী আদিত্যনাথ।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গ জ্বলছে। আর এত কিছুর পরেও মুখ বুজে আছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অসাম্প্রদায়িকতার নামে মমতা সরকার দাঙ্গাকারীদের স্বাধীনতা দিয়েছে। তাই আন্দোলনকারীদের দমনে লাঠির কোন বিকল্প নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘দাঙ্গাকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনার একমাত্র মাধ্যম বলপ্রয়োগ। আপনারা দেখছেন পশ্চিমবঙ্গ পুড়ছে। কিন্তু ওখানকার মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চুপ। দাঙ্গাকারীদের শান্তিদূত বলছেন তিনি। যারা লাঠির ভাষা বুঝে, তাদের সঙ্গে আলোচনার কোনো মানে আছে কী?’
এদিকে মুসলিমদের ছোট করে কথা বলার অভিযোগ উঠেছে খোদ দেশটির প্রধানমন্ত্রীর ওপর। সোমবার হরিয়ানায় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, সৎপন্থায় ওয়াকফের সম্পদ ব্যবহার করা হলে মুসলিম যুবকদের টায়ারের পাংচার ঠিক করার প্রয়োজন পড়তো না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘ওয়াকফের নামে সমগ্র দেশে লাখো হেক্টর জমি রয়েছে। সততার সঙ্গে যদি ওয়াকফের সম্পদ ব্যবহার করা হতো, তাহলে মুসলিম যুবকদের সাইকেলের পাংচার ঠিক করে জীবন পার করতে হতো না। কিন্তু এই আইনের মাধ্যমে মুষ্টিমেয় ভূমি দস্যুরা উপকৃত হয়েছেন।’
মোদির দিকে পাল্টা ঢিল ছুড়েছেন এআইএমআইএমের প্রধান ও হায়দ্রাবাদের এমপি আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি। এক্সে এক পোস্টে জানান, সনাতনদের সংগঠন আরএসএস দেশের স্বার্থে মতাদর্শ প্রচার ও সম্পদ ব্যবহার করলে ছোটবেলায় মোদির চা বিক্রির প্রয়োজন হতো না। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের সমালোচনা করেছে কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও।
এদিকে টানা তিনদিন সংঘর্ষের পর শান্ত পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে মুর্শিদাবাদে। সমশেরগঞ্জে দাঙ্গায় বাবা ও ছেলেকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুইজনকে।
স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমাদের দুটি গুদামঘর পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। ঘরে ঢুকে যা পেয়েছে, তাই পুড়িয়েছে। প্রতিবেশীর বাড়িও পুড়িয়েছে।’
পুলিশ বাহিনীর একজন বলেন, ‘এখনও উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। সিআরপিএফের ৮টি ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে। বাকি ৪টি আরএএফ ইউনিট এখানে সক্রিয় রয়েছে।’
মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, এতিমখানাসহ মুসলিমদের সম্পদ দেখভালে দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের ওপর। তবে মুসলিমদের অভিযোগ, আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। সংশোধিত আইনে ওয়াকফ বোর্ডে যোগ করা হয়েছে অমুসলিম সদস্য। এতেই ক্ষুব্ধ, আতঙ্কিত ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমরা। তবে ক্ষমতাসীন বিজেপির দাবি, দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনে আনা হয়েছে সংশোধনী। নতুন আইন চ্যালেঞ্জ করে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে ১৫টি পিটিশনের শুনানি হবে ।