এশিয়া
বিদেশে এখন
0

মুদ্রাস্ফীতির চাপে চীনের অর্থনীতি

মুদ্রাস্ফীতির চাপে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি এখন চীনের অর্থনীতি। ব্যবসা টিকিয়ে রাখা নিয়ে শঙ্কায় বহু রপ্তানিকারক।

চীনের শিল্প-কলকারখানার উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। চাহিদা কমে যাওয়ায় কিছু পণ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। তার উপর মার্কিন ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা ইউয়ানের দরপতন বাড়তি চ্যালেঞ্জ যোগ করেছে।

এতে করে মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানতে গিয়ে বারবার বেইজিং হোচট খাচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে কোভিড পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা।

মুদ্রাস্ফীতির চাপে চীনের ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছেন। টানা ১৫ মাস ধরে সরবরাহকারীদের বিভিন্ন পণ্যের দাম নিম্নমুখী। এমনকি চলতি বছর বেশিরভাগ রপ্তানিকারক যে পরিমাণ ক্রয়াদেশ পেয়েছেন তা গত বছরের তুলনায় অন্তত ২৫ শতাংশ কম।

মুনাফার মার্জিন কম হওয়ায় শিল্প মালিক ও কর্মীরা উভয়ই সংকটের মুখে রয়েছেন। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকে নামিয়ে আনাসহ কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছেন অনেক ব্যবসায়ী। যা চীনের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

এদিকে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে তারল্যের যোগান দিতে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। সস্তা ঋণের প্রস্তাব নিয়ে কারখানাগুলোর পেছনে ছুটছে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বড় প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্যে নতুন ব্যবসায় অর্থায়নের জন্য ঋণ নিতে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো আগ্রহ হারাচ্ছে । আর এটিকে অদক্ষ আর্থিক নীতির প্রভাব হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।

এ অবস্থায় চীনের অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করছেন চলতি বছর প্রায় ৫ শতাংশ প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেয়ে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।

কারণ, মুদ্রাস্ফীতির ঝড়ো হাওয়ায় গত বছর চীনের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ২.৩ শতাংশ মুনাফা কমেছে। আর জানুয়ারিতে এসে টানা চতুর্থ মাসের মতো কমেছে উৎপাদনের গতি। রপ্তানি আদেশেও নিম্নমুখী ধারা ১০ মাস ধরে অব্যাহত আছে।

দেশটির ইলেকট্রনিক্স, রাসায়নিক এবং যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থানের যোগান দেয়। তাই বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে এসব খাতকে প্রাধান্য দিয়ে নীতিনির্ধারকদের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এমনকি চাহিদার সঙ্গে ভারসাম্য রেখে আবাসন ও শিল্প-উৎপাদন বাড়ানো জরুরি বলেও পরামর্শ তাদের।