ক্যালেন্ডারের পাতায় ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ মানেই বাহারি ত্রিসমাস ট্রি, নিয়ন আলোর ঝলকানি, সান্তা ক্লজের উপহার আর মজার মজার কেকের সমাহার। মহিমান্বিত এ দিনটিতে বেথেলহাম নগরীতে জন্ম নিয়েছিলেন খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিস্ট। তার আগমনকে স্মরণ করে বিশেষ এ দিনটি নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালন করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা।
এবারে বড়দিনের উৎসবটি বিশেষভাবে আকর্ষণীয় যিশুর জন্ম নগরী বেলেথহামবাসীর কাছে। কেননা প্রায় দুই বছরের ইসরাইলি আগ্রাসনে ক্রিসমাসের আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি নগরীটির বাসিন্দারা। আগমন ঘটেনি কোনো বিদেশি পর্যটকের। তবে এবার গাজা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় পশ্চিম তীরের এ পবিত্র নগরীটির মানুষের মুখে ফুটেছে হাসি। জ্বলেছে আলোর রোশনাই। স্থানীয় সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের মিশেলে ক্রিসমাসের আগের রাতে বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেয় শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই।
বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেয়াদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমি আর্জেন্টিনা থেকে বেথেলহামে এসেছি। স্থানটি এখন নিরাপদ। বিশ্ববাসীকে পবিত্র স্থানটিতে আসতে আহ্বান জানাচ্ছি।’
অন্য একজন বলেন, ‘গত বছর আমরা ভয় আর আতঙ্কে দিনটি উদযাপন করেছি। তবে এবার খুশির আমেজ বিরাজ করছে নগরীজুড়ে।’
আরও পড়ুন:
এছাড়া বড়দিনের সাজে সেজেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি , ইতালি, সুইজারল্যান্ড থেকে শুরু করে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনেও। খ্রিস্টমাস ইভের বিশেষ প্রার্থনায় ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে জড়ো হওয়া ভক্তদের বড়দিনের শুভেচ্ছা জানান রোমান ক্যাথলিকদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ লিও চতুর্দশ। এসময় তিনি যুদ্ধ-বিদ্বেষ ভুলে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় সবার প্রতি আহ্বান জানান।
রোমান ক্যাথলিকদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ লিও চতুর্দশ বলেন, ‘আশা করি ঈশ্বর এবছর আমাদের আরও বেশি জ্ঞান, বিবেক- বুদ্ধি , শান্তি ও ভালোবাসা দেবেন। মানুষ একে অপরের মাঝে ভালোবাসা বিলিয়ে দেবে। এখন এটির বড়ই অভাব।’
ক্রিসমাস ইভের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে প্যারিসের নটরডেম ক্যাথেড্রালেও। এতে স্থানীয়রা ছাড়াও যোগ দেয় অন্য দেশ থাকা পর্যটকরাও। সবার চোখে- মুখেই বড়দিনের আমেজ, অনুভূতি ও আনন্দ।
পর্যটকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আশা করি এ হলিডে মৌসুমিটি পরিবার-পরিজন নিয়ে সবার খুব ভালো কাটবে। সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা।’
তবে ক্রিসমাসের দিনটিও যুদ্ধ আতঙ্কের মধ্যেই কাটাবে ইউক্রেনবাসী। উৎসবের দিনটিতেও যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়নি রাশিয়া। বড়দিনের প্রাক্কালে দেশবাসীর উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, শান্তি চায় ইউক্রেনবাসী। একই প্রত্যাশা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির মানুষজনেরও।
এদিকে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীসহ সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার , বেলজিয়ামের রাজা কিং ফিলিপসহ আরও অনেকে।





