১৯৪৮ সালের পর এমন মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড দেখেনি হংকংবাসী। ৮ দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তাইপো ডিস্ট্রিক্টের ওয়াং ফুক কোর্ট অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে প্রাণ যায় দেড়শতাধিক মানুষের। ভবন সংস্কারে ব্যবহৃত বাঁশের কাঠামো, নাইলনের জাল, স্টাইরোফোম ইত্যাদি থেকে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এমন বিশ্লেষণ উঠে আসলেও শুরু থেকেই ভবন কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে।
অগ্নিকাণ্ডের পর ভবন কর্তৃপক্ষ উইল পাওয়ার আর্কিটেক্ট ওয়াং ফুক কোর্ট অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেন, ভবন সংস্কারের নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রেস্টিজ কন্সট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি বরাবরই সেফটি রেকর্ড মেনে কাজ করে আসছে। অর্থাৎ ভবন সংস্কারে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেই তারা মেরামতের কাজ করে থাকে।
এরপর একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ভবন সংস্কারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির বিষয়টি সামনে আনলে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে রয়টার্স।
আরও পড়ুন:
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গেল ৭ বছরে এক ডজনেরও বেশিবার শাস্তির মুখোমুখি হয়েছে প্রেস্টিজ কন্সট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। প্রতিবারই তাদের বিরুদ্ধে সেফটি প্রোটোকল ভঙ্গ করার অভিযোগ ছিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হচ্ছে, ওয়াং ফুক কোর্ট ভবনের সংস্কারের সময় অনেক নির্মাণ শ্রমিক সেখানে ধূমপান করছিলেন, বারবার এ নিয়ে অভিযোগ জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। বাঁশের মাচার পাশাপাশি দ্রুত দাহ্য সিনথেটিক ও প্লাস্টিক উপকরণের ব্যবহার ছাড়াও ত্রুটিপূর্ণ বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের অভিযোগ আছে এ প্রেস্টিজ কন্সট্রাকশনের বিরুদ্ধে।
ভবনের বাসিন্দাসহ অন্তত ২৪ জন প্রত্যক্ষদর্শী, নির্মাণ কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি ও নিয়ন্ত্রক রেকর্ডের পর্যালোচনার ওপর ভিত্তি করে রয়টার্সের দাবি, আগেও সংস্কারকাজে গাফিলতির অভিযোগ ওঠা এ প্রতিষ্ঠানকে ভবন মেরামতের কাজ দিয়ে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি নিয়েছিল উইল পাওয়ার আর্কিটেক্ট। একাধিকবার এ প্রেস্টিজ কন্সট্রাকশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার পর তা আমলে নেননি সংশ্লিষ্টরা।




