২৫ দেশের দুই হাজার প্রকাশকের অংশগ্রহণে রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলা সম্পন্ন

রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলায় একটি স্টল
রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলায় একটি স্টল | ছবি: সংগৃহীত
0

সৌদি আরবে হয়ে গেল রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলা। দশদিন ব্যাপী আয়োজনে অংশ নেন ২৫টিরও বেশি দেশের ২ হাজারও বেশি প্রকাশক। এবারের মেলার মূল আকর্ষণ ছিল শিশু কর্নার। বিভিন্ন কার্টুন চরিত্রের পাশাপাশি বইয়ের সঙ্গে গড়ে ওঠে খুদে পাঠকদের সখ্যতা।

বয়স মাত্র দুই কি তিন। বইয়ের মাধ্যমে অজানাকে জানার আগ্রহ সৌদি আরবের ক্ষুদে এ পাঠকের। রিয়াদ আন্তর্জাতিক বই মেলার দৃশ্য মন কেড়েছে নেটিজেনদের। অভিভাবকরা বলছেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় মাঝেও ছোটবেলা থেকে শিশুদের যেন বই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে তাই শিশুদের নিয়ে এসেছেন আন্তর্জাতিক এ বইমেলায়।

একজন জানান, এ ধরণের অনুষ্ঠান শিশুদের পড়তে উৎসাহিত করে। তথ্য প্রযুক্তির যুগে আইপ্যাড এবং মোবাইল ফোনের চেয়ে বই শিশুদের শিখতে সাহায্য করে।

রিয়াদ আন্তর্জাতিক এই বইমেলায় ক্ষুদে পাঠকদের উপস্থিতি মুগ্ধ করেছে আয়োজকদেরও। উৎসুক চোখে স্টলে স্টলে ঘুরে পছন্দের বই খুঁজে নেন ক্ষুদে পাঠকরা। বেশিরভাগেরই আগ্রহ ছিল রঙিন মলাট ও ছবির বইয়ের প্রতি।

বড়দের কবিতা, উপন্যাস, ইসলামিক বইয়ের পাশাপাশি রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলায় শিশুদের জন্য হাজারও বই নিয়ে হাজির হন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রকাশনী সংস্থা। শুধু বই, নয়, কোমলমতি শিশুদের জন্য বইমেলার আয়োজন করা হয় শিশুচত্বর। ছোট্টো সোনামণিদের হইহুল্লোর আর আনন্দে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো প্রাঙ্গণ।

শিশু চত্বরে পছন্দের কার্টুন চরিত্রের সঙ্গে খুনসুটি ও আনন্দে উৎসবে মাতেন অনেকেই। রং-তুলি দিয়ে ক্যানভাসে পছন্দের কার্টুন চরিত্র ফুটিয়ে তুলেন ক্ষুদে পাঠকরা।

আয়োজক ও প্রকাশকরা জানান, নতুন প্রজন্মকে বিনোদনের পাশাপাশি বই পড়ার অভ্যাস গড়তেই এমন উদ্যোগ তাদের।

বইমেলায় আসা একজন বলেন, ‘বর্তমানে আইপ্যাড এবং ট্যাবলেট শিশুদের মন দখল করে নিয়েছে। তারা এগুলোর ওপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করে। বইয়ের প্রতি ভালোবাসা বাড়াতে বাচ্চাদের রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলায় নিয়ে আসা। যাতে তারা বিভিন্ন ধরণের বই দেখতে পারে। এত বড় প্রদর্শনীতে এটি আমাদের প্রথমবারের মতো আসা। সত্যি বলতে, এটি আশ্চর্যজনক। শিশুরা বৈচিত্র্য দেখে মুগ্ধ হয়েছিল। তারা এখন বই কিনতে এবং পড়তে চায়।’

আরেকজন বলেন, ‘রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলায়, আমরা শিশুদের জন্য বৈচিত্র্যময় এবং অনন্য অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পুরো পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার কার্যক্রম নিশ্চিত করেছি। আমরা বিশ্বাস করি মেলাটি কেবল বই প্রদর্শন এবং বিক্রি করার জায়গা নয়, এটি সম্পূর্ণ সাংস্কৃতিক উদযাপন।’

একটি প্রকাশনার মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা শিশুসাহিত্যে বিশেষজ্ঞ একটি প্রকাশনা সংস্থা, তাই আমরা শিশুদের জন্য সমৃদ্ধ গল্প, চিত্র এবং ইন্টারেক্টিভ কন্টেন্টের মাধ্যমে তাদের বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’

সৌদি রাজধানীর সবচেয়ে প্রত্যাশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি, রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলা। প্রতিবছরই চলে দশদিন ব্যাপী এই আয়োজন। ২০১৮ সালে প্রথম শুরু হয় রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলা। সৌদি সংস্কৃতি ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের এবারের আয়োজনে অংশ নেন ২৫ টিরও বেশি দেশের ২,০০০ এরও বেশি প্রকাশক।

এএইচ