দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে পরিণত হয়েছে রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ। এর মধ্যে দিয়ে রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের তীব্রতা তুঙ্গে। শঙ্কা বাড়ছে ন্যাটোর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ারও।
সব ন্যাটো দেশই এখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে অভিযোগ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। বিশেষ করে ইউরোপ রাশিয়াকে উসকানি দিলে শিগগিরই পাল্টা জবাব হবে বলে হুশিয়ার করলেন তিনি। রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সাগরপাড়ের শহর সোচিতে পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক এক ফোরামে এমন কড়া বার্তা দেন পুতিন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘আমরা ইউরোপের ক্রমবর্ধমান সামরিকীকরণের ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছি। আমরা শুনতে পাচ্ছি, তারা জার্মানির সেনাবাহিনীকে আবারও ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী করতে চাইছে। এসব ঘটনা আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। যদি কেউ সামরিক ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চায়, তাহলে আমরা বসে থাকবো না।’
গত মাসে রাশিয়াকে ‘পেপার টাইগার’ বলে আখ্যা দেয়ায় এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লেন পুতিন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করলে ভয়াবহ মাত্রায় নতুন এক উত্তেজনার অশুভ সূচনা হবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘ন্যাটো নিজেই কি পেপার টাইগার বাঘ নয়? আমি আগেই বলেছি যে এত বছর ধরে রাশিয়া শুধু ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছি না। প্রায় সমস্ত ন্যাটো দেশের বিরুদ্ধেও লড়াই করছি।’
এমনকি অন্য কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশ যদি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়, তাহলে মস্কোও সেই পথ অনুসরণ করবে বলে বার্তা দিয়েছেন পুতিন।
ভ্লাদিমির পুতিন আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের পারমাণবিক ঢালের ওপর আত্মবিশ্বাসী। আমরা জানি আগামীকাল এবং পরশু কী করতে হবে। যদি অন্যদের এটির প্রয়োজন না হয়, তাহলে আমাদেরও নেই। বিশেষ করে ফ্রান্স যদি সমগ্র ইউরোপকে তার পারমাণবিক অস্ত্রের শক্তি দিতে চায়; তাহলে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে তাই না?’
যুদ্ধবন্ধের জন্য অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করতে ইউরোপ ছাড়াও ভারত ও চীনকে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধে চাপ অব্যাহত রাখায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে সমালোচনাও করেছেন পুতিন। রাশিয়ান তেল ছাড়া বিশ্ব অর্থনীতি চলতে পারবে না বলেও হুশিয়ার করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
প্রেসিডেন্ট, রাশিয়া ভ্লাদিমির পুতিন ‘রাশিয়ান জ্বালানি উৎপাদক এবং রাশিয়ান ব্যবসায়ীরা বিশ্বের উল্লেখযোগ্য তেল সরবরাহকারক। তাদের বাদ দিলে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেবে। তেলের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যাবে। তেলের দাম তাৎক্ষণিকভাবে একশো ডলার ছাড়িয়ে যাবে।’
এরইরমধ্যে রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনায় ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপের পর নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরালো করতে ডিসেম্বরে ভারত সফরে যাচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এক প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে ডিসেম্বর মাসের ৫ বা ৬ তারিখে ভারতে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টের।





