রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, গেল মাসেই পারস্য উপসাগরে জাহাজ বোঝাই সামুদ্রিক মাইন পরিবহন করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এমন তথ্য পেয়ে উদ্বেগ বাড়ে যুক্তরাষ্ট্রের। ইসরাইলের হামলার জবাবে ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো বলে আশঙ্কায় ছিলো মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
ইরান ইসরাইল যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও এখনো উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। প্রতিদিনই মিলছে পাল্টাপাল্টি হামলার হুঁশিয়ারি। এমন পরিস্থিতিতে হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে তেহরান। এ লক্ষ্যে প্রণালীতে স্থাপন করা হতে পারে মাইন। ২ মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করে হইচই ফেলে দিয়েছে রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটির দাবি, গেল মাসেই পারস্য উপসাগরে জাহাজ বোঝাই সামুদ্রিক মাইন পরিবহন করা হয়। ১৩ জুন ইরানে ইসরাইলের হামলার পর বিষয়টি শনাক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এখন পর্যন্ত মাইনগুলো হরমুজ প্রণালীতে মোতায়েন করা হয়নি। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত শিপিং লেন বন্ধের বিষয়ে ইরানের পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র।
হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তার দাবি, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ইরানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি অবলম্বন ও অপারেশন মিডনাইট হ্যামারের কারণেই হরমুজ প্রণালী সচল রয়েছে। যদিও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চায়নি পেন্টাগন।
বিশ্ব অর্থনীতিতে কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ পারস্য ও ওমান উপসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী হরমুজ প্রণালী। এটি ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৩ কিলোমিটার প্রসস্থ। তেল সমৃদ্ধ পারস্য উপসাগর থেকে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে অপরিশোধিত তেল পরিবহনের একমাত্র পথ এটি। যার উত্তর ভাগের নিয়ন্ত্রণ করে ইরান।
মার্কিন জ্বালানি তথ্য সংস্থার মতে, প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ব্যারেল তেল এই প্রণালী দিয়ে প্রবাহিত হয়। যা দৈনিক বৈশ্বিক তেল রপ্তানির ২৫ শতাংশ। এছাড়াও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের ২০ শতাংশ পরিবহন হয় এই রুট দিয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জ্বালানির বাজার স্থিতিশীল রাখতে হরমুজ প্রণালী সচল রাখার কোনো বিকল্প নেই।
অডো বিএইচএফের বাণিজ্য প্রধান অলিভার রথ বলেন, ‘ট্যাংকারের মাধ্যমে বিশ্বের ২৫ শতাংশ জ্বালানি তেল এই প্রণালী দিয়ে পরিবহন হয়। তাই যেকোনো ধরনের উত্তেজনা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে তুলতে পারে। এটি খুবই নেতিবাচক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের বিষয়টি পূর্ব সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করতে হবে।’
ইতোমধ্যে হরমুজ প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্তে নীতিগত সমর্থন দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। যদিও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের অনুমোদনের অপেক্ষা করতে হবে।