জ্বালানি তেল আর প্রাকৃতিক গ্যাসকে বরাবরই পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে রাশিয়া। কিন্তু ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এই বাজারে রুশ নির্ভরশীলতা কমিয়ে এনেছে ইউরোপ।
এবার নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগেই রুশ জ্বালানি খাতে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বসেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এই নিষেধাজ্ঞার কারণে সোমবার ব্যারেল প্রতি জ্বালানি তেলের দর এক লাফে ৫ ডলার বেড়ে ৮১ ডলারে পৌঁছেছে। চার মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।
নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম নেফট আর সার্গাতনেফটোগ্যাজের ওপর। সঙ্গে রয়েছে ১শ' ৮৩ টি পণ্যবাহী জাহাজ, যেগুলো দিয়ে রাশিয়া জ্বালানি তেল সরবরাহ করে। রুশ জ্বালানি খাত বরাবরই পশ্চিমাদের লক্ষ্য, কারণ এই খাত থেকে আসা রাজস্ব দিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিচালনা করে মস্কো।
বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, নিষেধাজ্ঞার কারণে কেবল রাশিয়া নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত আর চীনও। কম খরচে মিত্র দেশের জ্বালানি তেল রেখে বাজার খুঁজতে হবে যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য আর আফ্রিকায়।
যে কার্গোবাহী জাহাজগুলো নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে, তারমধ্যে ২০২৪ সালে ১৪৩ টি তেলের ট্যাঙ্কার ৫৩ কোটি ব্যারেল জ্বালানি পরিবহন করেছে, যা দেশটির মোট সমুদ্রে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বাণিজ্যের ৪২ শতাংশ। নিষেধাজ্ঞার কারণে বেড়ে যাবে পরিবহন খরচ। বিশ্ববাজারে রুশ জ্বালানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে আরও বাড়তে পারে জ্বালানি তেলের দর।
গেলো বছরের প্রথম ১১ মাসে রাশিয়া থেকে দৈনিক ১৭ লাখ ব্যারেল জ্বালানি আমদানি করেছে ভারত। একই সময়ে চীন আমদানি করেছে প্রায় ১০ কোটি মেট্রিক টন জ্বালানি।
নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্র আর আফ্রিকায় বিকল্প বাজার খুঁজতে হবে চীন আর ভারতকে। কিন্তু ঊর্ধ্বমুখী বাজারের কারণে এখানকার দেশগুলোতেও বেড়ে গেছে জ্বালানির দর।
এর আগে ইউক্রেন দিয়ে রাশিয়ার গ্যাস ইউরোপে সরবরাহের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ। ফলে, বিপাকে পড়েছে গোটা ইউরোপ।