রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে মাত্র ৮শ' কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রাশিয়ার কাজান শহর। সম্মুখসারির ১ হাজার কিলোমিটারে এই শহরে ভয়াবহ ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ১৩ লাখ বাসিন্দার এই শহরের সুউচ্চ ৩৭ তলা ভবনে ভয়াবহ ড্রোন হামলায় কেউ হতাহত না হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবন। এই হামলার পর কাজান বিমানবন্দর কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
এই হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ঘোষণা দেন, খুব দ্রুত রাশিয়ার অস্ত্রের গুদামে ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করবে কিয়েভ। এরপরই চটে গিয়ে গেলো ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের অস্ত্রের গুদাম, সাঁজোয়া যান আর আর্টিলারির মজুতে হামলা করে বসে মস্কো। ড্রোন হামলা করা হয় রাশিয়ার কুরস্ক আর খারকিভে। রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এসময় ইউক্রেনের অনেক রকেট আর ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করে।
যদিও ইউক্রেনকে হামলা করে বারবার রাশিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করছে, কিন্তু এই দেশ পুনর্গঠনে অর্থ সহায়তার ১১০ কোটি ডলার ছাড় দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। ৪৮ মাসের জন্য যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে ৯৮০ কোটি ডলার দেয়া হলো। দেশ পুনর্গঠনে ১৪ হাজার ৮শ' কোটি ডলারের তহবিল রয়েছে। যদিও রাশিয়ার দাবি, তাদের জব্দ করা তহবিল থেকে ইউক্রেনকে ২৫০ কোটি ডলার দেয়ার পরিকল্পনা করছে ব্রিটেন, যা জালিয়াতির শামিল।
এদিকে, তীব্র শীতের মৌসুমে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানি নিয়ে চরম বিপাকে পড়ে গেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কারণ ভলোদিমির জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পহেলা জানুয়ারি থেকে ইউক্রেন হয়ে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের আর কোন চুক্তি থাকছে না। ইউক্রেনে রক্ত ঝড়িয়ে রাশিয়াকে কোটি কোটি ডলার আয় করতে দেবে না। কিয়েভের এই সিদ্ধান্তে রাশিয়ার গ্যাস পাবে না স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, ইতালি আর অস্ট্রিয়া।
অন্যদিকে জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যদি গ্যাস রপ্তানির চুক্তি নবায়ন করা না হয়, রাশিয়া কিংবা গ্যাজপ্রম, কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে মস্কোর গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন দিয়ে সবচেয়ে বেশি গ্যাস সরবরাহ হতো ইউরোপে, যা ২০২২ সাল থেকে বন্ধ। এখন ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের একটি পাইপলাইনই সচল আছে, যেটি জেলেনস্কি বন্ধ করে দিতে চাইছেন।