ছুরি, কাঁচি, সুঁই ছেড়ে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন হাতে রাজপথে দক্ষিণ কোরিয়ার হাজারো চিকিৎসক। মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের ভর্তির কোটা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে চলছে চিকিৎসকদের এই আন্দোলন।
দেশটির স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে ২০২৫ সালের শিক্ষাবর্ষ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায়, মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার করতে চায় সরকার। তবে তা মানতে নারাজ দেশটির চিকিৎসকরা। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে, চাকরিই ছেড়ে দিয়েছে ৭ হাজার ৮শ'র বেশি ইন্টার্ন এবং আবাসিক চিকিৎসক। অস্ত্রোপচারসহ অনেক হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে, এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা।
দক্ষিণ কোরিয়ার চিকিৎসকরা আন্দোলন করছেন।
বিক্ষোভকারী চিকিৎসকদের অভিযোগ, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি না করে, কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লে শিক্ষার মান হারাবে। আগামীতে চাকরির বাজারে অস্থিরতা তৈরি হবে। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে আগামী মাস থেকে বড় আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা তাদের।
চিকিৎসকরা বলেন, ‘মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত একতরফা ও অযৌক্তিক। আগে লেখাপড়ার মান উন্নত করতে হবে। চিকিৎসকদের চাকরি ও বেতনের নিশ্চয়তা দিতে হবে, ১০ বছর পর কী হবে তা আগে ভেবে রাখলে চলবে না।’
আন্দোলনরত এক চিকিৎসক বলেন, আমি মনে-প্রাণে একজন চিকিৎসক, এই পেশায় কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত। আমার ছেলে মেডিকেলে পড়ালেখা করছে, কিন্তু ভবিষ্যতে তার চাকরির নিশ্চিয়তা নেই।
কোটা বৃদ্ধির বিরোধিতা করে আন্দোলনের নামে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির সরকার। দক্ষিণ কোরিয়ায় স্বাস্থ্যসেবায় কর্মরত আছেন প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার চিকিৎসক।
ইংল্যান্ডের হাসপাতালগুলোতে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন ইংল্যান্ডের জুনিয়র চিকিৎসকরা। টানা পাঁচ দিনের ধর্মঘট শেষে রাজপথে নামেন তারা। শুধু ইংল্যান্ড নয়, ওয়েলসেও চলছে চিকিৎসকদের ধর্মঘট। চলমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে ৩৫ শতাংশ বেতন বাড়ানোর দাবি জানান জুনিয়র চিকিৎসকরা।
ব্রিটেনের অধ্যাপক মার্টিন জ্যাকস বলেন, সরকারের উচিত সামরিক সহায়তা প্রদানের পরিবর্তে, দেশীয় উন্নয়নের ওপর বেশি জোর দেওয়া। বর্তমানে ব্রিটেনের অর্থনীতি ভালো করছে না। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
চিকিৎসকদের আন্দোলনের কারণে গেল বছর ইংল্যান্ডে বাতিল হয় প্রায় ১৩ লাখ অ্যাপয়েন্টমেন্ট। বর্তমানে চিকিৎসা সংক্রান্ত সেবা পেতেও রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামীতেও ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়তে পারে।