করলার তিতকুটে স্বাদে লুকিয়ে আছে বহু পুষ্টিগুণ

করলার ছবি
করলার ছবি | ছবি: সংগৃহীত
1

বাংলাদেশে করলা একটি অত্যন্ত পরিচিত সবজি। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমবেশি এ সবজি রান্না করা হয়। যদিও করলার তিতকুটে স্বাদ অনেকের পছন্দ নয়, তবু এর পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা একে বিশেষ করে তোলে। করলা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি উপকারী। এছাড়া এটি দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে, ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং হজমে সহায়তা করে। নিয়মিত পরিমাণমতো করলা খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। তবে সতর্ক থাকা প্রয়োজন, অতিরিক্ত বা ভুলভাবে করলা খাওয়ার ফলে শারীরিক অস্বস্তি ও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই এর গুণাগুণ পেতে পরিমিত মাত্রায় করলা খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

করলার উপকারিতা

—করলা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

—করলাতে বিদ্যমান বিটা ক্যারোটিন নামক রঞ্জক পদার্থ চোখের জন্য বেশ উপকারী, যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।

—করলাতে থাকা ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’ ত্বককে সুস্থ রাখে, ব্রণ এবং অন্যান্য চর্মরোগ সারাতে সাহায্য করে এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

করলার তরকারি |ছবি: সংগৃহীত

—করলা হজমশক্তি বাড়াতে বেশ সহায়ক এবং এ সবজি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

—এ সবজি কম ক্যালোরি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে, যা ওজন কমাতে সহায়ক।

—করলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-কাশির সম্ভাবনা কমাতে পারে। 

আরও পড়ুন:

অপরিমিত করলা খাওয়ার অপকারিতা ও সতর্কতা

—অতিরিক্ত করলা খেলে, বিশেষ করে করলার বীজে থাকা ল্যাকটিন প্রোটিনের কারণে হজমের সমস্যা, যেমন- পেট ব্যথা বা ডায়রিয়া হতে পারে।

—যাদের কিডনির রোগ আছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত করলা খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এটি পটাশিয়াম ও ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

—গর্ভবতী মহিলাদের করলা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। কারণ এটি জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে।

—যারা ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবন করেন, তারা অতিরিক্ত করলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। 

খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা

করলার জুস খালি পেটে পান করলে তা শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। যেমন– রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হজমশক্তি বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা।

করলার শরবত |ছবি: সংগৃহীত

শরীরের টক্সিন দূর করে লিভার পরিষ্কার রাখতেও এর ভূমিকা অনেক। করলার রসে পানি ও মধু মিশিয়ে পান করলে তা অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস ও গলার প্রদাহ দূর করতে পারে।

আরও পড়ুন:

করলা সিদ্ধ খাওয়ার উপকারিতা

করলা সিদ্ধ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর হয়। করলায় থাকা ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার শরীরে পুষ্টির যোগান দেয়। করলা সিদ্ধ রক্তে ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এতে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকায় এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে।

করলা সিদ্ধ |ছবি: সংগৃহীত

করলা সিদ্ধ প্রাকৃতিক উপায়ে কিডনিতে পাথর রোগের নিরাময়ে সহায়তা করে। এটি রক্ত পরিশোধন করতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন চর্মরোগ যেমন স্ক্যাবিস ও রিং ওয়ার্মের মতো সমস্যায় উপকারী হতে পারে। এছাড়া পেট পরিষ্কার রাখতেও এটি সহায়তা করে।

এসএইচ