মাশরুম কী
মাশরুম হলো একটি প্রকারের ছত্রাক (ফাঙ্গি), যা সাধারণত আর্দ্র পরিবেশে জন্মে। এটি জমি, গাছের ছাই বা কাঠের বায়ো-ম্যাটের উপর চাষ করা যায়। মাশরুমের প্রজাতি নানা রকম: সাদা বাটন মাশরুম, ওয়েস্টার মাশরুম, শিটাকে, ওরিয়েন্টাল মাশরুম ইত্যাদি।
মাশরুমের বৈশিষ্ট্য
মাশরুমের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর ছত্রাকজাত কাঠামো, মৃদু মাটির গন্ধ, ও বিভিন্ন আকার ও রং। এটি প্রোটিনে সমৃদ্ধ, ক্যালোরি কম এবং ফাইবার, ভিটামিন বি, সেলেনিয়াম ও পটাশিয়াম সরবরাহ করে। বিশেষভাবে, এটি চর্বি ও কোলেস্টেরল মুক্ত।
বাংলাদেশে মাশরুম চাষ পদ্ধতি
বাংলাদেশে মাশরুম চাষের জন্য মূলত তিনটি ধাপ রয়েছে—
১. বীজ সংরক্ষণ ও ইনকিউবেশন: বীজ ভালো মানের হতে হবে।
২. স্ট্র (ছাই বা ধানকুঁড়ি) প্রস্তুতি: মাশরুমের জন্য পরিবেশ প্রস্তুত করা।
৩. চারা রোপণ ও সংগ্রহ: সঠিক তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বজায় রেখে মাশরুম গাছগুলো রোপণ করা হয়।
মাশরুম বীজের দাম
বাংলাদেশে মাশরুম বীজের দাম প্রজাতি অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। সাধারণ বাটন মাশরুমের বীজের দাম ৫০-৮০ টাকা প্রতি কেজি। ওয়েস্টার মাশরুমের বীজ প্রায় ১৫০-২০০ টাকা প্রতি কেজি।
মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি
বীজ তৈরিতে মূলত স্টেরাইলাইজড স্ট্র এবং ছত্রাক স্পন ব্যবহার করা হয়। মাশরুমের স্পনকে ধাপে ধাপে স্ট্রে মিশিয়ে ইনকিউবেটরে রাখা হয়। কিছু প্রজাতি ধীরে ধীরে স্প্রে ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বীজ থেকে ছত্রাক জন্মায়।
মাশরুম খাওয়ার নিয়ম
মাশরুম খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তেল বা ঘি দিয়ে ভাজা, স্যুপে ব্যবহার করা বা সালাদের সঙ্গে খাওয়া যায়। কাঁচা মাশরুম খাওয়া স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে, তাই রান্না করা ভালো।
মাশরুমের উপকারিতা
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে
হজম প্রক্রিয়া সহজ করে
হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে
ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
মাশরুমের উপকারিতা
অতি পরিমাণে খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে
কাঁচা বা বিষাক্ত প্রজাতি খেলে জ্বর, বমি বা বমিভাব সৃষ্টি করতে পারে
মাশরুমের দাম কত
বাংলাদেশে সাধারণ বাটন মাশরুমের দাম বাজারে প্রতি কেজি ২০০-২৫০ টাকা। বিশেষ প্রজাতির মাশরুম যেমন শিটাকে বা ওয়েস্টার, দাম ৪০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
কোনটি সবচেয়ে বিষাক্ত মাশরুম
বিষাক্ত মাশরুমের মধ্যে Amanita phalloides (ড্যামবোল ফাঙ্গি) সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এটি খেলে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জীবনহানি ঘটতে পারে।
সবচেয়ে দামি মাশরুম কোনটি
বিশ্বে সবচেয়ে দামি মাশরুম হলো White Truffle। প্রতি কেজি দাম লাখ টাকার কাছাকাছি হতে পারে।
বাংলাদেশে মাশরুম কত প্রকার
বাংলাদেশে সাধারণত তিন প্রকার মাশরুম চাষ হয়—
১. বাটন মাশরুম
২. ওয়েস্টার মাশরুম
৩. স্থানীয় বন মাশরুম
মাশরুম চাষ কেন লাভজনক
মাশরুম চাষ কম জমি, সীমিত পানি ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে করা যায়। উৎপাদন চক্র দ্রুত এবং বাজারে চাহিদা বেশি। তাই এটি নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য লাভজনক।
মাশরুম চাষের ট্রেনিং কোথায় হয়
বাংলাদেশে বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, যেমন: বুয়েট, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মাশরুম চাষে প্রশিক্ষণ প্রদান করে।
মাশরুমের বীজ কোথায় পাওয়া যায়
বীজ সাধারণত কৃষি দোকান বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যায়। সঠিক মানের বীজ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কিনতে পরামর্শ দেয়া হয়।
ওয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি
ওয়েস্টার মাশরুম চাষে আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ। মূল ধাপগুলো হলো—
স্ট্র বা ছাই প্রস্তুতি
বীজ ইনকিউবেশন
ছত্রাক বিকাশ পর্যবেক্ষণ
সংগ্রহ এবং বাজারজাত





