রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসন বিশ্ব বাণিজ্যের সরবরাহ ব্যবস্থাকে ফেলেছে বিপাকে। এতে দেশে দেশে বাড়ছে অর্থনৈতিক সংকট, মূল্যস্ফীতি। ধুঁকছে বিশ্ব অর্থনীতিও। বিশ্বের সিংহভাগ খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি আমদানি-রপ্তানি হয় এসব দেশের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা সমুদ্রপথ দিয়ে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেও যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত নেই। বরং এই সংঘাদ দীর্ঘায়িত হওয়ারই আভাস মিলছে। এক দেশ থেকে অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ছে যুদ্ধের উত্তাপ। দীর্ঘদিনের স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে হামলা, পাল্টা হামলায় ইরান - ইসরাইলের মধ্যে বিরাজ করছে যুদ্ধ পরিস্থিতি। এছাড়া চীন-তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা তো আছেই।
এর মধ্যে ইউক্রেন, ইসরাইল ও তাইওয়ানকে সব দিক থেকে সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্ররা। প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে দেয়া হচ্ছে হাজার হাজার কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা।
মিত্র দেশগুলোর জন্য সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের সাড়ে ৯ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা বিলের অনুমোদন নিয়েও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ডেমোক্রেট নেতার বলছেন, এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দিকে গুরুত্ব না দিয়ে যুদ্ধে জড়িত একটি পক্ষকে সহায়তা দেওয়ার মানে সংঘাতকে আরও উস্কে দেয়া। এমনকি তাইওয়ানের জন্য বরাদ্দ রাখায় ক্ষিপ্ত চীনও।
চীনের তাইওয়ান বিষয়ক কার্যালয়ের মুখপাত্র ঝু ফেংলিয়ান বলেন, 'তাইওয়ান ইস্যুটি সম্পূর্ণ চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যেখানে বাইরের হস্তক্ষেপ মোটেও কাম্য না। তাইওয়ানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা এক-চীন নীতি এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগুলোকে লঙ্ঘন করে। তাই আমরা তাইওয়ানকে যে কোনও উপায়ে অস্ত্র দেয়া বন্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাই।'
এদিকে বিশ্বে জ্বালানি চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে রাশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। তাই বিশেষজ্ঞরা শঙ্কা করছেন. ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ আরও দীর্ঘ হলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে তেল ও গ্যাস বাণিজ্যে। সার্বিক মূল্যস্ফীতি আবারও বাড়তে পারে। এভাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা আরও বাড়লে স্বর্ণের দামও বাড়ার শঙ্কা আছে।
যুদ্ধের পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দার পাশাপাশি ভ্রমণ ও পর্যটন খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ অনেক মানুষই যুদ্ধে জর্জরিত অঞ্চলে ভ্রমণ করতে ভয় পাবেন। যে কারণে আকাশ ও জলপথের ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট ব্যবসা হুমকিতে পড়বে। সম্প্রতি ইরান-ইসরাইল উত্তেজনার মধ্যে বিরোধপূর্ণ অঞ্চল এড়িয়ে বিকল্প পথে চলাচলের কথাও ভাবে অনেক বিমান সংস্থা।