শিগগিরই আসছে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত

0

ধাপে ধাপে বিদ্যুতের ভর্তুকি তুলে নেয়ার পরিকল্পনা

শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য নিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করেই সক্ষমতা বাড়াতে নজর দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। লক্ষ্য পূরণে গত ১৫ বছরে ২৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বেড়ে হয়েছে দেড়শ’, আর ৪ হাজার থেকে সক্ষমতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার মেগাওয়াটে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে উৎপাদন সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াাট বিদ্যুৎ। দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের মিটার সংখ্যা সাড়ে ৪ কোটির বেশি। আর স্বল্প মূল্যে বিদ্যুৎ পাচ্ছে প্রায় ১ কোটি গ্রাহক।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহে সরকারের সাফল্যের পেছনের গল্প এতো সহজে রচিত হয়নি। গত অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ৩৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। চলতি অর্থবছরে এ খাতেই উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার কোটি টাকা। ভর্তুকির সম্ভাবনা গত অর্থবছরের চেয়েও বেশি।

আর ১৫ বছরে এই খাতে ভর্তুকি দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। চাহিদার তুলনায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বেশি উৎপাদন সক্ষমতা ধরে রাখা ও আমদানি করা এলএনজি দিয়ে জ্বালানি চাহিদা মেটাতে গিয়ে গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে লোকসান দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি। ভর্তুকি দিয়েও ধাক্কা মেটাতে না পেরে এ সময়ে পাইকারিতে দাম বাড়ানো হয়েছে ১১ বার আর খুচরায় ১৩ বার। আর্থিক চাপে ভর্তুকি কমিয়ে দায় এবার ভোক্তাদের কাঁধে চাপাতে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

২০২২ সাল পর্যন্ত গণশুনানির ভিত্তিতে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। ২০২২ সালে বিইআরসি’র সংশোধিত অধ্যাদেশে সেই বাধ্যবাধকতাও উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। যে কারণে এখন শুনানি ছাড়াই দাম সমন্বয়ের একচেটিয়া অধিকার পেয়েছে সরকার। সেই সুযোগে সরকার গত এক বছরে একাধিকবার বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ধাপে ধাপে ভর্তুকি তুলে নিয়ে মূল্য সন্বয়য়ের রূপরেখাও তৈরি করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, 'সরকার ধীরে ধীরে ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসবে। আমরা দামের কাঠামো নিয়ে কাজ করেছি। ইতোমধ্যে তেলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়ে দিয়েছেন। এরপর আমরা বিদ্যুৎ ও গ্যাস নিয়ে কাজ করবো।'

|undefined

তবে কৃষিখাতসহ এক কোটি নিম্ন আয়ের গ্রাহকদের আগের মতোই স্বল্প মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত থাকবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

এদিকে চলতি অর্থবছর থেকেই বিদ্যুতে ভর্তুকি তুলে নিতে শর্ত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তাই শিগগিরই আসতে পারে দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত। আর ভর্তুকি তুলে নিলে পিডিবির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের পাইকারি দাম হতে পারে ১২ টাকা।