শিল্প-কারখানা
অর্থনীতি
0

‘শ্রমিক-মালিক একসঙ্গে কাজ করবে, এটিই অন্তর্বর্তী সরকারের বড় লক্ষ্য’

ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, শ্রমিক-মালিক একসঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে, এটিই অন্তর্বর্তী সরকারের বড় লক্ষ্য। গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই কিছু দুস্কৃতকারী শিল্প-কারখানায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অভিযোগ জানালেন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। আজ (বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে 'জাতীয় ব্যবসা সংলাপ' অনুষ্ঠানে শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় যৌথবাহিনীর তৎপরতা জোরদারের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

দায়িত্ব নেয়ার এক মাসের মাথায় প্রথমারের মতো ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সংলাপে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের আয়োজনে "জাতীয় ব্যবসা সংলাপ" শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয় এফবিসিসিআই ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্সসহ ১৫টি ব্যবসায়ী সংগঠন। দীর্ঘ এই সংলাপে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির পাশাপাশি উঠে আসে বর্তমান অর্থনৈতিক চিত্র।

সভাপতির বক্তব্যে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) নির্বাহী পরিচালক মীর নাসির বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময় থেকেই দেশে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা চালাচ্ছে কিছু দুষ্কৃতকারী। যার বড় প্রভাব পড়েছে শিল্পকারখানার উপর।’ এজন্য যৌথবাহিনীর তৎপরতা আরও জোরালো করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

মীর নাসির বলেন, 'বহিরাগতদের কারণে শিল্প-কারখানাগুলোতে অস্থিতরতা বাড়ছে। এমনকি শ্রমিকসংগঠনগুলো এর সাথে জড়িত নয় বলে জানাচ্ছে। শিল্প-কারখানাগুলোতে লুট হামলার মতো ঘটনা ঘটছে। যার ফলে  এখন পর্যন্ত ১০০টির বেশি কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।'

অভ্যুত্থান পরবর্তী আর্থিক খাতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়ে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ছাত্র জনতার গণআন্দোলনের অর্জনকে ফলপ্রসূ ও অর্থবহ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাবে ব্যবসায়ী সমাজ।

মীর নাসির বলেন, 'শিল্পাঞ্চলে আরও বেশি পরিমাণ সেনাবাহিনীর টহল জোরদারের জন্য অনুরোধ করছি।' 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা বলেন, কিছু ব্যবসায়ী শিল্প মালিক বিগত সরকারের আনুকুল্যে থেকে রাতারাতি অনেক টাকার মালিক হয়ে গেছেন। তারা দেশের সুনাম নষ্ট করেছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, 'শিল্পাঞ্চলগুলো অনেকটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে।  আমরা আশা করছি সবাই একসঙ্গে কাজ করলে এই সাময়িক অসুবিধা থেকে নিজেদের কাটিয়ে নিতে পারবো।' 

অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘১৫ থেকে ১৬ বছরের সমস্যাগুলো আমরা স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাধান করার চেষ্টা করবো।’ 

প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান সাধারণ কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল না। আন্দোলনকারীদের লক্ষ্যই ছিল একটি নতুন বাংলাদেশ।’

তাই আর পচন নয়, সুস্থ ও সবল জাতি হিসেবে দাঁড়ানোর প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বড় লক্ষ্য শ্রমিক-মালিক একটা টিম হিসেবে কাজ করবে।

তিনি বলেন, 'আমরা স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। সরকার এবং সরকার বাহিরে যারা সবাই একজোট। সবাই অ্যাক্টিব।' 

এসময় সামাজিক ব্যবসায় আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ইউরোপ- আমেরিকা জুড়ে ব্যবসার নতুন নতুন দরজা খোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'আপনার যাই করেন না কেন সবকিছুর পাশে একটা সামাজিক ব্যবসা করেন। আপনার এলাকার জন্য কিছু করেন। আপনার এলাকার কারো কিছু দরকার হলে এগিয়ে যেন শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকবেন কেন?'

এসময় অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে তৈরি পোশাক খাতকে বিশ্বের এক নম্বরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর