অব্যাহত দূষণ ও সিইটিপি পূর্ণাঙ্গ সক্ষমতায় কাজ না করায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত হয়নি সাভার চামড়া শিল্প নগরীর। তাই চামড়া রপ্তানিতে বিশ্ববাজারে ভালো দাম পাচ্ছে না দেশিয় ট্যানারি শিল্প।
তবে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে এবার নতুন পরিকল্পনা হাতে নিতে যাচ্ছে শিল্প ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে তারা। বুধবার (৬ মার্চ) সাভারে বিসিক ট্যানারি শিল্প নগরী নিয়ে মন্ত্রণালয় দু'টির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে আলোচনায় এ কথা জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
সালমান এফ রহমান বলেন, 'সমস্যা জানতে পেরেছি। আমাদের সমাধান কীভাবে করা যায় সেটা নিয়ে আবার একটা মিটিং করবো। স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা করে সমাধান করা হবে।'
আগামী কোরবানি ঈদের আগে যেন কাজ শুরু হয় এজন্য ট্যানারি লাইসেন্সের কিছু শর্ত শিথিল করা হবে বলে জানান পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
মন্ত্রী বলেন, 'পরিবেশের স্বার্থে কোনো জায়গায় আপস না করি। আমরা যদি ছাড় দিতে পারি যে মানদন্ড রয়েছে সেখানে আমরা দেখব ছাড় দিতে পারি কিনা। তবে এই ছাড়টা মৌলিক কোনো ছাড় হবে না।'
আর এই সভায় আলোচনার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান শিল্পমন্ত্রী মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
মন্ত্রী বলেন, 'আমরা এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য এখানে বসিনি। আমরা সরেজমিনে দেখার জন্য এসেছি। সমস্যা বিদ্যমান। আমরা সমস্যার সমাধান সম্পর্কে জেনেছি এবং সমাধান সল্পমেয়াদী, দীর্ঘমেয়াদী এইভাবে হবে। একদিনে সমাধান হবে না।'
একে অপরকে দোষ চাপিয়ে দায় এড়ানোর চক্র থেকে বের হয়ে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান সালমান এফ রহমান। সেই সঙ্গে কেউ চাইলে ব্যক্তিগত ইটিপি করার সুযোগও আগে থেকেই দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের এক পরিসংখ্যানে জানানো হয়, ধলেশ্বরী নদীতে যে পরিমাণে অক্সিজেন থাকার কথা তা ট্যানারির কারণে অনেকটাই কম। যদি এই সমস্যার দ্রুত সমাধান না হয়; তবে ভবিষ্যতে এই নদীসহ বুড়িগঙ্গার নদীর পরিস্থিতি আরোও সংকটময় হতে পারে।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার ভেতর দিয়ে বহমান ধলেশ্বরী নদী। ট্যানারি বর্জ্যের কারণে ধীরে ধীরে বৈচিত্র্য হারাতে শুরু করেছে যমুনার শাখা এই নদীটি।
প্রথমে বুড়িগঙ্গা নদীকে ট্যানারির দূষণ থেকে বাঁচাতে গত ১০ বছরেরও আগে হাজারিবাগ থেকে সরিয়ে সাভারে নিয়ে আসা হয় এই শিল্পকে। যা ধলেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত। তবে ট্যানারি শিল্পনগরীটি পরিকল্পিতভাবে তৈরি হলেও এর তরল বর্জ্য পরিশোধনের প্ল্যান্টটি রয়েছে অপরিপূর্ণ।
২৫ হাজার কিউবিক লিটার পানি পরিশোধনের সক্ষমতা থাকলেও কাজ করছে মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার কিউবিক লিটারের। এতে ট্যানারির বর্জ্য নদীতে গিয়ে ক্ষতি করছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের। এমন অব্যবস্থাপনা ও দূষণের দায় দেয়া হচ্ছে এই প্রকল্পে যুক্ত থাকা একে অপরের কাঁধে। সবশেষ সিইটিপি নিয়ে কাজ করা চায়না ঠিকাদারকে দোষ দিচ্ছে শিল্প ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়।





