দেশের ৯২ শতাংশ পণ্য আমদানি রপ্তানি হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। আমদানি পণ্য জাহাজ থেকে বন্দরে চত্বরে নামার পর শুল্কায়ন প্রক্রিয়া শেষে পণ্য ডেলিভারি নিতে পারেন আমদানিকারকরা। কিন্তু গত সোমবার (১২ মে) রাতে এক অধ্যাদেশে অন্তবর্তী সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরকে ভেঙে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দু’টি বিভাগ করলে এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৩ মে) থেকে কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করছেন কাস্টমস, আয়কর ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তারা।
রাজস্ব কর্মকর্তাদের সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কর্মবিরতির ফলে কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য চালানের শুল্কায়ন কার্যক্রম ও রাজস্ব আহরণ। সারাদিন টেবিলে টেবিলে ঘুরলেও দু’টি হলরুমে কোন রাজস্ব কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকায় কাজ শেষ করতে পারছেন না সিএন্ডএফ এজেন্টরা।
সিএন্ডএফ এজেন্টদের মধ্যে একজন বলেন, ‘অফিসাররা যখন কর্মবিরতি করছে, এর ফলে আমরা যারা জড়িত এবং কাজ করি তারা চরম ভোগান্তিতে আছি।’
পণ্য চালানের শুল্কায়ন না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে যথাসময়ে আমদানি পণ্য খালাস করতে না পারায় বিপুল জরিমানা ও লোকসান গুণতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। বিঘ্নিত হচ্ছে রপ্তানি পণ্যের শিপমেন্ট। বাড়ছে শিপিং ও পোর্ট ডেমারেজ।
বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘যদি কাস্টমস কর্মবিরতির কারণে আমাদের রপ্তানিটাও বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে আমরা সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়ে যাই। আমরা কোনোভাবেই এটা মেনে নিতে পারি না। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এক ধরনের স্থবিরতার মধ্যে পড়ে গেছে।’
আলাপ আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম-সম্পাদক জামাল উদ্দিন বাবলু বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে হ্যাঁ অথবা না কিছুই বলতে পারি না। কিন্তু এই আন্দোলনে সিএন্ডএফ এজেন্টদের এবং আমদানি-রপ্তানিকারকদের কষ্ট বেড়েছে।’
প্রতিদিন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে গড়ে সাত থেকে সাড়ে সাত হাজার আমদানি-রপ্তানি চালানের বিল অব এন্ট্রি বা নথি দাখিল হয়।
আমদানি পণ্যের শুল্ক ও কর বাবদ গড়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে আড়াইশ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। কর্মবিরতির কারণে সীমিত পরিমাণে কাজ হওয়ায় রাজস্ব আয়ও কমে গেছে।