বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানিতে জাহাজীকরণের মাধ্যমে নদী পথ বেছে নেয়া হলেও অনেকসময় দ্রুত ডেলিভারির জন্য ক্রেতাদের পছন্দ আকাশপথ। এক্ষেত্রে শীর্ষ পণ্য তৈরি পোশাক।
তবে তৈরি পোশাক উৎপাদনের অন্যতম এ গন্তব্য কতটুকু সহজ ক্রেতাদের জন্য? চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহারে অতিরিক্ত খরচ ও কাস্টমস জটিলতার বিষয়টি বেশ পুরোনো। একইভাবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ওয়্যারহাউজের সেবার মানও প্রশ্নাতীত নয়।
২০ বছর আগে তৈরি হওয়া কার্গো ওয়্যারহাউজের পরিধি না বাড়লেও রপ্তানি বেড়েছে তিন গুণ। অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতায় সময় ক্ষেপণ, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় পরিচালন খরচ বেশি হওয়ায় ঢাকার বিমানবন্দর রপ্তানিকারকদের জন্য ব্যয়বহুল।
এছাড়া স্ক্যানিং ও ইডিএস মেশিন না থাকায় ঢাকার আকাশ পথ ব্যবহারে কার্গো এয়ারলাইন্স যেমন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তেমনি অন্যপথ বেছে নিয়েছে বিদেশি ক্রেতারা।
এ অবস্থায় দীর্ঘদিন তাদের রুট ছিল মালদ্বীপ। তবে ২০২০ সালে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহারের চুক্তির পর ক্রেতাদের গন্তব্য হয় দিল্লি এয়ারপোর্ট। যেখানে ঢাকার চেয়ে কেজিপ্রতি খরচ কমে প্রায় ১ ডলার।
গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের ঘোষণায় আলোচনা তৈরি হয় রপ্তানিকারকদের মধ্যে। তাদের মতে এতে লাভবান হবে বাংলাদেশ।
এদিকে ২০১৫ সালে ভারতকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার চুক্তি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। তবে দেশ লাভবান হয় এমন চুক্তি বাতিল না করার পক্ষে ব্যবসায়ীরা।
নেপাল ও ভুটান যেহেতু এ সিদ্ধান্তের বাইরে তাই বাংলাদেশের রপ্তানিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মত অর্থনীতিবিদদের। তবে এটি বাতিলের আগে বাংলাদেশের সাথে আলোচনা করা দরকার ছিল বলে মনে করেন তারা।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘কোলকাতা বন্দর ব্যবহার করে, এয়ারপোর্ট ব্যবহার করে আমরা পণ্য রপ্তানি করতে পারতাম, সেই সুবিধাটি বন্ধ হওয়ার ফলে এখন যেটা হবে যে বাংলাদেশের বন্দরগুলোতো চাপ বৃদ্ধি পাবে। সেক্ষেত্রে কার্গোর খরচও হয়ত বাড়বে। তবে অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া সীমিত হলেও, এই সিদ্ধান্তটি আমাদের হতবাক করেছে।’
বাংলাদেশে উৎপাদিত মোট তৈরি পোশাকের দশ থেকে ১২ শতাংশ রপ্তানি হয় দিল্লির আকাশ পথ ব্যবহার করে। তবে ভারতের এমন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের পাশাপাশি লাভবান হবে মালদ্বীপ।