২০২২ সালে ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোর পথে হাটে রাশিয়া। সেই থেকে শুধু কৃষিখাত, মাংস ও মাংসজাত পণ্যের আমদানি-রপ্তানি নয়, পুরোপুরি বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে ওঠেছে মস্কো-বেইজিং।
২০২৪ সালে চীনে রাশিয়ার মাংস বিক্রি ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই মুরগির মাংস। এছাড়াও রাশিয়ার গরু এবং অন্যান্য প্রাণির মাংসের শীর্ষ আমদানিকারক হয়ে ওঠেছে চীন। এতে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার দাবি রাশিয়া মাংস উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের।
রাশিয়ার কৃষি জায়ান্ট মিরাটর্গ প্রেসিডেন্ট ভিক্টর লিনিক বলেন, ‘রাশিয়ায় গরুর মাংস এবং শুয়োরের মাংসের এক নম্বর উৎপাদক মিরাটর্গ। আমরা রপ্তানি বাড়িয়েছি। বিশ্বের ৪৫ টিরও বেশি দেশে সরবরাহ করছি। এরমধ্যে চীনেই রপ্তানি হচ্ছে প্রায় ৩০ শতাংশ। চীন আমাদের জন্য এক নম্বর অগ্রাধিকার।’
২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে, রাশিয়ার মাংস এবং মাংসজাত পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৪ শতাংশ। অর্থের হিসেবে যা পৌঁছেছে রেকর্ড ১৭০ কোটি মার্কিন ডলার। ২০৩০ সালের মধ্যে রাশিয়ান মাংস রপ্তানি আয় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩৬০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাশিয়ার ইয়াকভ অ্যান্ড পার্টনার্সের পরিচালক অ্যালেক্সি ক্লেটস্কো বলেন, ‘রাশিয়ায় ১২০ মিলিয়ন হেক্টরের বেশি কৃষি জমি রয়েছে। সুতরাং রপ্তানি বাড়লেও কোনও সীমাবদ্ধতা দেখা দেবে না।’
মাংস ও কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়ায় এসব খাত সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি রাশিয়ার কাছে রপ্তানি করছে চীন। সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়ায় রাশিয়ার কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয়তা পেয়েছে চীনা যন্ত্রপাতি।
রাশিয়ার চীনা কৃষি যন্ত্রপাতি বিক্রয় সংস্থা ব্যবস্থাপক কনস্ট্যান্টিন এচিন বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই ৪ দফা ট্রাক্টর আমদানি করেছি। চীনা কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের মান উন্নত করছে।’
চীনা ট্র্যাক্টর এবং কম্বাইন্ড হারভেস্টারগুলো ইউরোপীয়দের প্রতিপক্ষের তুলনায় ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ কম দামে পাওয়া যায় বলে দাবি রাশিয়ার কৃষকদের। যার কারণে সয়াবিন, রেপসিড বা ক্যানোলার মতো তেলবীজ উৎপাদন প্রক্রিয়াজাত করতে চীনের কৃষি যন্ত্রাংশের উপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে রাশিয়ায়।