দেশে ১৬৮টি চা বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজারেই ৯২টির অবস্থান। ২০২৩ সালে চা শিল্পের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজির বেশি চা উৎপাদন হলেও ২০২৪ সালে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কমেছে চা উৎপাদন। এছাড়া, শ্রমিক অসন্তোষও উৎপাদন কম হওয়ার অন্যতম কারণ।
শ্রীমঙ্গল ক্লোনেল টি গার্ডেন ম্যানেজার রনি ভৌমিক বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে অনেকগুলো বাগান বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে উৎপাদন কিছুটা কম হচ্ছে।’
এ বছরও ১০ কোটি ৩ লাখ কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় শুরু হয়েছে চা উৎপাদন। উৎপাদনকারীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, উৎপাদন খরচের বিপরীতে বাড়েনি চায়ের দাম ও বিক্রি। এক্ষেত্রে, চায়ের গুণগত মান বৃদ্ধির পরামর্শ দিলেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, ‘চা বোর্ডের একটা নির্ধারিত রেট আছে যেটা হলো ১৬০ টাকা। তবে ১৬০ টাকায় কেনার মতো না, এমন চাও সেখানে আছে। কিছু আছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকার। কিন্তু সেই দামে কেউ কিনতে পারছে না।’
ন্যাশনাল টি কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. মহসিন মিয়া মধু বলেন, ‘উৎপাদন গত বছরের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিয়ে কাজের পরিধি বাড়াতে হবে।’
ভালো মানের চা নিলামে না ওঠায় বায়াররাও চা কিনছেন কম। তারা বলছেন, সমতলে চা উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও এর গুণগত মান ভালো নয়। এজন্য দামও কমে যাচ্ছে। এদিকে, চা বোর্ড বলছে, উৎপাদন বৃদ্ধি ও বিদেশে চা রপ্তানির জন্য নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ।
শ্রীমঙ্গল টি ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি এস এম এন মুনির বলেন, ‘চা পাতার মান ভালো না হলে চা ভালো হবে না। চায়ের মান ভালো না হলে তারা চা নেবে না।’
বাংলাদেশ চা বোর্ড চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, ‘এটা সত্য যে সবকিছু মিলিয়েই আমাদের চা রপ্তানি কিছুটা কমে গিয়েছিল, কিন্তু ২০২৪ এ সেটা বেড়েছে। তবে আমরা সেটা নিয়ে খুব বেশি খুশি হচ্ছি না। এই রপ্তানির পরিমাণ আরো বাড়ানোর সুযোগ আমাদের রয়েছে। আমরা সেই সুযোগগুলো নিতে কাজ করছি।’
১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা-বাগানের মাধ্যমে দেশে প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা চাষ শুরু হয়। দেশে মোট উৎপাদিত চায়ের অর্ধেক আসে মৌলভীবাজারের বাগান থেকে।