পাহাড়, নদী ও হাওড় সমৃদ্ধ জেলা নেত্রকোণা। আবহাওয়া আর প্রকৃতির সাথে ভিন্নতা রয়েছে এখানকার চাষাবাদেও। বছরে এই জেলায় উৎপাদন হয় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ধান।
তবে, অসমতল জমি ও টিলাগুলোতে চাষাবাদে বেশ খরচ গুনতে হয় কৃষকদের। এছাড়া সার কীটনাশকসহ কৃষি যন্ত্রপাতির দাম বাড়ায় ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন এলাকার কৃষকরা। যেখানে চা আবাদের সম্ভাবনা দেখছেন তারা।
দুর্গাপুর ও কলমাকান্দার পাহাড়ি সীমান্তবর্তী এলাকায় যতদূর চোখ যায় দেখা মেলে এই বেগুনি ফুলের। যা স্থানীয়ভাবে দাঁতভাঙা বা বনতেজপাতাও বলা হয়ে থাকে। স্থানীয়দের মতে প্রাকৃতিকভাবে যেখানে এই গাছ জন্মায় সেই অঞ্চলে থাকে চা চাষের অপার সম্ভাবনা। পাহাড় ও টিলার অনাবাদি জায়গা চাষের আওতায় আনা গেলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অঞ্চলটি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০০৪ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ১৫টি উপজেলার ১৩ হাজার ৬৪৫ একর জমি চা চাষের জন্য উপযোগী ধরা হয়। ২০১৯ সালে আবাদ শুরু করতে প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসক বলছেন, চা চাষের মাধ্যমে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
নেত্রকোণা মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুখলেছুর রহমান বলেন, ‘চা বাগানের জন্য জমি তৈরি করার পাশাপাশি এই পুরো প্রক্রিয়াটি আসলে অনেকটা টেকনিক্যাল। ’
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, ‘যদি চা চাষের জন্য উপযোগী হয় তাহলে সরকার পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। যাতে এখানে চা উৎপাদন করা যায় আর তা হলে নেত্রকোণার জন্য আরো একটি আর্থিক খাত তৈরি হবে।’
চা বোর্ডের জরিপ অনুযায়ী বৃহত্তর ময়মনসিংহের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে বছরে প্রায় ১৬ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন করা সম্ভব।