আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
1

পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে চালু হচ্ছে চায়না-চিটাগং এক্সপ্রেস

বাণিজ্য বাড়ায় চীন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে সরাসরি পণ্য পরিবহনে আগ্রহ বাড়ছে শিপিং কোম্পানিগুলোর। এর আগে, শুধু চীন থেকে আমদানি পণ্য পরিবহনে সরাসরি সার্ভিস চললেও এবার আসা-যাওয়া দু'পথেই এই সেবা চালু করছে সিঙ্গাপুরের জাহাজ কোম্পানি প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল লাইন্স।

চায়না-চিটাগং এক্সপ্রেস নামে এই পরিষেবা চালু হবে আজ থেকে। সেবার আওতায় চীনের নিঙবো বন্দর থেকে সাংহাই-শেকু বন্দর হয়ে চট্টগ্রামে ভিড়বে জাহাজ।

ফিরতিপথে চট্টগ্রাম বন্দর থকে রপ্তানিপণ্য নিয়ে সরাসরি নিঙবো ও অপর দুটি বন্দরে যাবে জাহাজ। বন্দর ব্যবহারকারীদের মতে, এ ধরনের সার্ভিস যত বেশি চালু হবে, পণ্য পরিবহনের খরচ ও সময় দুটোই কমবে।

এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীন। দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। দেশের মোট আমদানি পণ্যের এক-চতুর্থাংশই আসে চীন থেকে।

মূলধনি যন্ত্রপাতি, শিল্পের কাঁচামাল, ভোগ্যপণ্য, ইলেকট্রনিক ও প্রযুক্তি পণ্য, বিভিন্ন যন্ত্রাংশসহ বেশিরভাগ পণ্যই আমদানি করা হয়। এতে চীনের বিভিন্ন বন্দর থেকে আমদানি পণ্য নিয়ে বর্তমানে ছয় থেকে সাতটি শিপিং লাইনের সার্ভিস থাকলেও তা চাহিদা পূরণে যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এই রুটে চাহিদা বাড়ায় চীন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে সরাসরি পণ্য পরিবহনে আগ্রহ বাড়ছে বিভিন্ন শিপিং কোম্পানির।

এ তালিকায় সবশেষ যুক্ত হলো সিঙ্গাপুরের জাহাজ কোম্পানি প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল লাইনস-পিআইএল। অন্যান্য জাহাজ কোম্পানি চীন থেকে সরাসরি আমদানি পণ্য নিয়ে এলেও ফিরতি পথে সেগুলো ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর সিঙ্গাপুর বা কলম্বো ঘুরে যায়।

তবে পিআইএল আমদানি ও রপ্তানি দুটোই সরাসরি পরিবহন করবে। তাই এই রুটে সার্ভিস বাড়লে প্রতিযোগিতার কারণে পণ্য পরিবহনে খরচ ও সময় দুটোই কমবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি মঈনুদ্দিন আহমেদ মিন্টু বলেন, জাহাজগুলো যদি সরাসরি এভাবে চলে এবং সংখ্যা বাড়ে তাহলে আমরা দেখবো সেখানে জাহাজ ভাড়া কমে যাবে। এটা একটা অর্থনৈতিক বিষয়। এখানে খরচ কমানো গেলে আমাদের জন্য বিশাল একটা প্রাপ্তি।’

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ বলেন,‘এখানে যত বেশি জাহাজ দেয়া যাবে তত সুবিধা হবে। আপনারা দেখবেন আমদানি করা পণ্যের জাহাজগুলো পরিপূর্ণ অবস্থায় আসে। ট্রান্সশিপমেন্টের কারণে অনেক পথ ঘুরে আসতে হয়। এতে সময় ও বেশি লাগে খরচও বেড়ে যায়।’

বেশিরভাগ শিল্পের কাঁচামাল আসে চীন থেকে। কিন্তু, বাংলাদেশ থেকে চীনে রপ্তানি কম থাকায় লোকসান এড়াতে একটি কনসোর্টিয়ামের অধীনে এই সেবা চালু করবে পিআইএল। মাসে তিনটি জাহাজ চীনের নিঙবো বন্দর থেকে সাংহাই ও শেকু বন্দর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর রুটে পণ্য পরিবহন করবে। প্রয়োজনে ট্রিপ আরো বাড়তে পারে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপকক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘এটি চালু হলে আমদানি-রপ্তানিকারকরা উপকৃত হবে। আগে সিঙ্গাপুর হয়ে একটি জাহাজ চীন পৌঁছাতে ১৮ থেকে ২০ দিন সময় লাগতো। এক্ষেত্রে ১০ দিনের মধ্যে এটা সম্ভব হবে ।’

গেল বছর চীন থেকে ২ হাজার ২৯০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। বিপরীতে রপ্তানি করে মাত্র ৬৮ কোটি ডলারের পণ্য। কম খরচে পণ্য রপ্তানিতে এই সেবা সহায়ক হবে বলে মনে করেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

tech

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর