পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য গেল বছরের ৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে ২২ বছরের চুক্তি করে সৌদি আরবের রেড সি গেইটওয়ে। গত ৬ এপ্রিল পিসিটির কার্যক্রম শুরুর কথা থাকলেও এনবিআরের অনুমোদন পাওয়াসহ নানা জটিলতায় পিছিয়েছে কার্যক্রম শুরুর তারিখ।
১০ জুন মার্কস দাবাউ নামের জাহাজটি এই টার্মিনালে ভিড়বে। তবে জাহাজটি শুধু রপ্তানি পণ্য বোঝাই করবে বলে জানায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। টার্মিনালে পণ্য খালাসের গ্যান্ট্রি ক্রেন না থাকায় আপাতত শুধু রপ্তানি পণ্য পরিবহন এবং ক্রেন আছে এমন গিয়ার জাহাজ ভিড়বে টার্মিনালে। কয়েকটি জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের পর ভিড়বে আমদানি পণ্যবাহী জাহাজও। তবে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সব সুবিধা নিয়ে টার্মিনালটি পুরোদমে চালু হতে সময় লাগবে আরও দুই বছর।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, 'চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যে কনটেইনার টার্মিনাল চালু করা হয়েছিল, সেটা এখন পুরোদমে চালু হবে। সেই সাথে জাহাজের জট লেগে থাকা সমস্যারও সমাধান হবে।'
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের দুটি কনটেইনার টার্মিনাল এনসিটি ও সিসিটি পরিচালনা করছে দেশিয় অপারেটর। তাই বিদেশি অপারেটর দ্বারা পরিচালিত এই টার্মিনাল চালুর অপেক্ষায় আছে বন্দর ব্যবহারকারীরা।
এই টার্মিনাল পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে নীতিমালা তৈরি করেছে এনবিআর। ব্যবহারকারীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক অপারেটর টার্মিনাল পরিচালনায় নিযুক্ত হওয়ায় বন্দরের অন্যান্য টার্মিনাল অপারেটরদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা তৈরি হবে।
ফ্রেইটফরওয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, 'বড় জাহাজগুলো কনটেইনার নিয়ে ভিড়ার মাধ্যমে আমাদের আমদানি রপ্তানির চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে।'
এই টার্মিনাল পরিচালনায় থাকছে ভিন্নতা। জেটিতে জাহাজ ভিড়ার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগেই রপ্তানি পণ্য টার্মিনালে নিয়ে আসতে হবে। এতে ডিপোগুলোর ওপর চাপ কমবে। প্রাথমিক কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও এ ব্যাপারে আশাবাদী বন্দর ব্যবহারকারীরা।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোটস্ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার বিপ্লব বলেন, 'এই টার্মিনাল অপারেটর উন্নত বিশ্বে যেভাবে অফপারেট করেছে, তার ধারাবাহিকতা যেন এখানেও থাকে।'
পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের তিনটি জেটিতে একসাথে তিনটি কনটেইনার জাহাজ ভিড়তে পারবে। বছরে প্রায় ৫ লাখ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম এই টার্মিনাল। ২২ বছরের চুক্তি অনুযায়ী সৌদি প্রতিষ্ঠান থেকে রয়্যালিটি বা রাজস্ব পাবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে দুই বছর অলস পড়ে থাকায় কয়েকশো কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে বন্দর।