সকাল পেরিয়ে দুপুর গড়ালেও থাকে না কর্মব্যস্ততা। শুধু সুনশান নীরবতা থাকে। এ পথে তেমন দেখা মিলে না ভারত থেকে আসা কিংবা ভারতে যাওয়া যাত্রীদেরও। অবকাঠামোগত চাকচিক্য থাকলেও ঝিমিয়ে পড়েছে বিলোনিয়া স্থলবন্দরটি।
বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য সুবিধা বাড়াতে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ফেনীর বিলোনিয়া শুল্কবন্দরটি ২০০৯ সালের ৪ অক্টোবর স্থলবন্দরে রুপান্তর করা হয়। কিন্তু ১৫ বছরেও কাঙ্ক্ষিত গতি আসেনি বন্দরটিতে। ১৯টি পণ্য আমদানির অনুমতি দিলেও গত দুই বছরে দুই দফা পণ্য আমদানি ছাড়া নানা জটিলতায় আর কোন পণ্য আমদানি করতে পারেনি আমদানিকারকরা।
এ বন্দরে কাজ করে জীবিকা চলতো স্থানীয় অনেকের। বেকার হয়ে পড়ায় এখন পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছেন তারা।
ফেনীর পরশুরাম সীমান্তের এ স্থলবন্দর দিয়ে দ্বিমুখী বাণিজ্য চালু থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে শুধুমাত্র সিমেন্ট রপ্তানি হচ্ছে। নেই তেমন আমদানিও। এতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বন্দরের কার্যক্রমে।
পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল বলেন, 'এ সীমান্ত দিয়ে গরু, কয়লা, ফলমূল, পেঁয়াজ আসার কথা ছিল। কিন্তু সম্পূর্ণ আমাদের ব্যর্থতায় তা আনতে পারছি না। ফেনীর লোকজন যেন উপকৃত হয় সরকারকে ঐ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করবো।'
১৫ বছরে আলোর মুখ দেখেনি বিলোনীয়া বন্দরটি। ছবি: এখন টিভি
মুহুরী ঘাট হিসাবে পরিচিতি এ শুল্ক স্টেশন দিয়ে নিয়মিত যাত্রী পারাপার হলেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে তাও এখন তুলনামূলকভাবে কম। বন্দর ব্যবহার না হওয়ায় লোকসান গুণতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
প্রতিমাসে জনবল ও অবকাঠামোর রক্ষনাবেক্ষণ ব্যয় ৪ লাখ টাকার বেশি হলেও আয় হয় না ৫০ হাজার টাকাও।
বন্দরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম ভূঞাঁ বলেন, 'আমদানি তো একেবারেই কম আছে। সরকারিভাবে আমরা চেষ্টা করছি এবং ব্যবসায়ীরাও বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে আমদানি বৃদ্ধির জন্য।'
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ফেনী থেকে বিলোনিয়া সড়ক প্রশস্ত না হওয়া, অবকাঠোমে উন্নয়নের অভাব ও নানা অব্যবস্থাপনায় বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন না তারা। এসব সমস্যা নিরসনে কাজ করার আশ্বাস দেন ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। বলেন, 'চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য খালাস করে এ বন্দর দিয়ে প্রবেশের জন্য চেষ্টা করা যেতে পারে। আবার ফেনী-বিলোনিয়ার রেল লাইনটা পুণরায় চালু করে পণ্য পরিবহনে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। তাহলে বন্দরটা অনেক বেশি সক্রিয় হবে।'
বিলোনিয়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ, রসুন, হলুদ, মরিচ, পাথর, কয়লাসহ ১৯টি পণ্যের আমদানির অনুমতি রয়েছে।