শুরু হচ্ছে আখাউড়া স্থলবন্দরের আধুনিকায়ন কাজ

আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

অতিদ্রুতই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের আধুনিকায়ন কাজ শুরু হচ্ছে। এর ফলে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য গতি পাবে। এর পাশাপাশি যাত্রী ভোগান্তিও নিরসন হবে। ২১৭ কোটি টাকা ব্যায়ে আখাউড়া ও তামাবিল স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

১৯৯৪ সালে সর্বপ্রথম আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাণিজ্য বাড়তে থাকায় ২০১০ সালে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় আখাউড়া স্থলবন্দর। তবে প্রতিষ্ঠার দুই যুগেও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি দেশের অন্যতম বৃহৎ এ স্থলবন্দরে।

মূলত আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি হওয়ায় রপ্তানিমুখী বন্দর হিসেবেই ধরা হয় আখাউড়া স্থলবন্দরকে। প্রতিদিন গড়ে ২ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের হিমায়িত মাছ, সিমেন্ট, প্লাস্টিক ও খাদ্য সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে।

রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি যাত্রী পারাপারেও বেনাপোলের পরেই আখাউড়া স্থলবন্দরের অবস্থান। যার মাধ্যমে সরকারের বিপুল রাজস্ব আসে। তবে জরাজীর্ণ কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবনে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় প্রতিনিয়ত। এছাড়া আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে দেখা দেয় নানা প্রতিবন্ধকতা।

আখাউড়া স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হাসিবুল হাসান বলেন, 'পণ্য আসলে খোলা আকাশের নিচে রাখতে হয়। আশা করি বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের একটি স্থান করে দেবে এবং ট্রাক টার্মিনালটাও বড় করে দেবে।'

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আখাউড়া স্থলবন্দর পরিদর্শনে এসে যাত্রী ভোগান্তি নিরসন এবং বাণিজ্য বাড়াতে সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন প্রকল্পের আওতায় শীঘ্রই বন্দরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ শুরুর কথা জানান স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান চৌধুরী।

প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড, ওয়্যার হাউজসহ আরও বেশ কিছু স্থাপনা তৈরি হবে। দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী মার্চেই কাজ শুরুর কথা জানান প্রকল্প পরিচালক জাহাঙ্গীর কবির।

তিনি বলেন, 'ওজন মাপার জন্য স্কেল থাকবে, প্রশাসনিক ভবন থাকবে। এছাড়াও রেস্ট হাউজ, ডরমেটরি থাকবে। এটা যেহেতু এডিবির টাকায় হবে। এডিবি মূল্যায়ন করে টেন্ডার অনুমোদন দিলে আমরা মার্চে কাজ শুরু করতে পারবো।'

বন্দরের অকাঠামোগত সুবিধা নিশ্চিত হলে আমদানি-রপ্তানি বাড়বে বলে জানান স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।

জিল্লুর রহমান বলেন, 'যে পরিকল্পনা আছে সে অনুযায়ী আমরা এটা বাস্তায়ন করবো। এ বন্দরে আশা করি বড় একটা পরিবর্তন আসবে। রাস্তাটাও চারলেন হচ্ছে, এর ফলে দুই দেশই উপকৃত হবে।'

২০২২-২৩ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হয় ৩৭৬ কোটি ৬২ লাখ টাকার বিভিন্ন পণ্য। একই সময়ে আমদানি পণ্য প্রায় ৬৬ কোটি টাকার। আর চলতি অর্থবছরে গত জানুয়ারি পর্যন্ত বন্দর দিয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছে ২৬৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকার পণ্য। আমদানি হয়েছে মাত্র সোয়া ৬ কোটি টাকার পণ্য।

এসএস