বাংলাদেশের তাঁবুর শীর্ষ ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র

0

তাঁবু রপ্তানিতে বিশ্বে তৃতীয় বাংলাদেশ

কাপড় কাটা, সেলাই, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ ১০ ধাপ পেরিয়ে তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের তাঁবু। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে চট্টগ্রাম ইপিজেডের এইচকেডি তাঁবু কারখানায়।

যেখানে ১১টি শেডে তৈরি হচ্ছে একজন থেকে সর্বোচ্চ ১৬ জন থাকার মতো তাঁবু। যার দাম সর্বনিন্ম ২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত।

বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ, শরনার্থী শিবির, দুর্যোগে আশ্রয়, শ্রমিক থাকাসহ নানা কাজে বাড়ছে তাঁবুর ব্যবহার। সেই সাথে বাড়ছে এর বাজারও।

ব্যতিক্রমী এ পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থান বাংলাদেশের। চট্টগ্রাম ও কর্ণফুলী ইপিজেডের ১৪ টি কারখানা বিশ্বের ৩৫ টি দেশে তাঁবু রপ্তানি করছে। এরমধ্যে সবচেয়ে নামকরা প্রতিষ্ঠান এইচকেডি, যেটি বিশ্বে তাঁবুর বাজারে ৪০ শতাংশ দখলে রেখেছে। প্রতিদিন এ কারখানায় ছোট বড় মিলে ২০ হাজার তাঁবু তৈরি হয়।

শ্রমিকরা বলেন, 'একজন ক্রেতা যেভাবে সেটআপ করে দেখে আমরাও তেমনভাবে দেখি যে কোন সমস্যা হয় কি না। যখন পুরো তাঁবুটা তৈরি হয় তখন আমাদের মনে আনন্দ লাগে।'

সাশ্রয়ী দাম আর মানে ভাল হওয়ায় বিশ্ববাজারে প্রশংসা কুড়িয়েছে দেশের তৈরি তাঁবু। বাংলাদেশের প্রধান ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া কানাডা, জার্মানি, স্পেন, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া, পানামা, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনে তাঁবু রপ্তানি হচ্ছে। বিশ্বখ্যাত চেইনশপ ওয়ালমার্ট ও কোলম্যান, কে মার্ট, একাডেমি ও বাফেলোর মতো প্রতিষ্ঠান তাঁবু কেনে বাংলাদেশ থেকে।

|undefined

তাঁবু তৈরিতে ব্যস্ত কারখানার শ্রমিকরা

এইচকেডি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার আজমীর হোসাইন মিঠু বলেন, 'আমাদের ১১টা ফ্লোর এখন চলমান রয়েছে। প্রায় ৭০ শতাংশ আমেরিকায় রপ্তানি করি। বাকিগুলো রাশিয়া, কানাডা, কোরিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে যায়।'

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাবে, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ তাঁবু রপ্তানিতে আয় করে ২৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার। ২০২১- ২২ অর্থবছরে আয় করে ৪২ কোটি মার্কিন ডলার। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে যুদ্ধ ও মন্দায় তা কমে গিয়ে দাঁড়ায় ২৭ কোটি ৬ লাখ ডলারে।

একসময় তাঁবু তৈরির বেশির ভাগ কাঁচামাল আমদানি করতে হলেও ধীরে ধীরে সে পরিমান কমিয়ে দেশীয় কাঁচামালের ব্যবহার বাড়িয়েছে কারখানা মালিকরা।

ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাহাত হোসেন বলেন, 'আমরা দেশীয় উপকরন ব্যবহার করে তাঁবু তৈরি করছি। সারা মাসে প্রায় ৩ লাখ পিস তৈরি করে থাকি।'

সাম্প্রতিক সময়ে এসব তাঁবুতে যোগ হচ্ছে আধুনিক সুযোগ সুবিধাও। সোলার প্যানেল, লাইট, মোবাইল চার্জার, হিটারসহ নানা জিনিস যুক্ত হচ্ছে চাহিদার সাথ তাল মিলিয়ে।

গবেষণা বলছে, ২০২৮ সালে বিশ্বে তাঁবুর বাজার হতে পারে ৪০০ কোটি ডলারের। যেখানে বড় সম্ভাবনা দেখছে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা।