কৃষি
অর্থনীতি
0

রাজধানীতে কোল্ড চেইন বিনিয়োগ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সংরক্ষণের অভাবে প্রতিবছর নষ্ট হয় বিপুল পরিমাণ ফসল। রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এখাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রস্তাব উঠে আসে। আলোচকরা জানান, দিনে দিনে বাড়ছে সংরক্ষণাগারের ব্যবসায়ের সম্ভাবনা। এতে ফল-ফসল সংরক্ষণ সুবিধা বাড়বে, মাত্রা কমবে রাসায়নিক দিয়ে সংরক্ষণেরও।

সালাদের অন্যতম উপকরণ গাজর এখন সারাবছরই মেলে বাজারে। তবে মৌসুম শেষ হয়ে গেলে বাজারে চায়না গাজর কিনতে হয়। গত বছর ১২ হাজার টন গাজর আমদানি করা হয়েছে। অথচ হিমাগার থাকলে এ পরিমাণ গাজর দেশেই উৎপাদন সম্ভব।

কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, বছরে প্রায় ৪০ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে ২ দশমিক ৪৮ লাখ হেক্টর জমি থেকে দেশে উৎপাদন হচ্ছে ৩৫ হাজার টন পেয়াঁজ। প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন পেয়াঁজের ঘাটতি থাকায় পণ্যটির ঝাঁঝে ভোক্তার চোখে যেমন পানি আসে তেমনি ঘাটতি পূরণে আমদানিতে খরচ করতে হয় বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। বিপরীতে হিমাগারের অভাবে ২৫ শতাংশ পেঁয়াজই নষ্ট হচ্ছে।

দেশে বর্তমানে হিমাগারের সংখ্যা চারশোর মতো। যেগুলোর অর্ধেকেই ব্যবহার হয় আলু সংরক্ষণে। বাকীগুলোর বেশিরভাগই বীজ ও সবজি সংরক্ষণে। এসব হিমাগারে বছরে ৫০ লাখ টন পণ্য সংরক্ষণ করা যায়। অথচ পাশের দেশ ভারতের উত্তর প্রদেশেই ১৮শর ওপর হিমাগার রয়েছে।

অথচ ২০৩০ সাল নাগাদ সংরক্ষণাগার, পরিবহন ব্যবস্থা ও মূল্য সংযোজন সেবায় সমন্বিত বাজার মূল্য ৪৪ কোটি ডলার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এমন পরিস্থিতিতে এ খাতে গুরুত্ব দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

বুধবার ( ২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড- বিডা ও যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের বাংলাদেশ প্রকল্প- বিটিএফের উদ্যোগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কোল্ড চেইন বিনিয়োগ সম্মেলনে উঠে আসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সরবরাহ ব্যবস্থার চালচিত্র।

দেশে আলু সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে বেশি কোল্ড স্টোরেজ থাকলেও পেঁয়াজ, গাজর, ফল, সবজিসহ অন্যান্য পণ্য সংরক্ষণের যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। তিনি জানান, কোল্ড স্টোরেজ বাড়ানো গেলে ফরমালিন প্রয়োগের মাত্রা কমবে।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, 'সরকারি নীতি নির্ধারক থেকে আমাদের উদ্যোক্তাদেরকে আগ্রহী করার জন্য একটা পলিসি করার প্রয়োজন, যাতে করে আমরা পেঁয়াজের কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করতে পারি এবং কোন প্রযুক্তিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায় সেদিকে নজর দেওয়া।'

দেশের স্থলবন্দরগুলোয় পণ্য রপ্তানি প্রক্রিয়া দ্রুত করার পরামর্শও উঠে আসে সম্মলেন থেকে।

তবে পচনশীল কৃষি পণ্য রপ্তানির চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বেসরকারি খাতকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সরবরাহ ব্যবস্থা ও সংরক্ষণাগারে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, 'বেসরকারি খাতকে আমি বলতে চাইব যে সম্ভাবনাময় জায়গায় বিনিয়োগ করার আছে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় এ কথায় বলেছেন আমাদের কৃষিখাত যেটা বহুমুখী করতে চাচ্ছেন।  আমার আহ্বান থাকবে বেসরকারি খাত থেকে আপনারা এসে এখানে বিনিয়োগ করেন।'

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে আগের চেয়ে কৃষি পণ্য নষ্ট হচ্ছে কম বলেও জানান প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর