নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশের ৫টি অভয়াশ্রমে চলছে মাছ শিকার

.
কৃষি , মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ
এখন জনপদে
0

উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাটকার নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিত করতে দেশের ৫টি অভয়াশ্রমে চলছে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা। শরীয়তপুরের পদ্মাতেও ২০ কিলোমিটার অভয়াশ্রমে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না জেলেরা। মাছ শিকারের পর তা বিক্রি হচ্ছে নদী তীরেই। জেলেদের অভিযোগ সময়মতো খাদ্য সহায়তা না পাওয়া, ঋণের বোঝা আর ঈদের বাড়তি খরচ মেটাতে নদীতে নামতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

শরীয়তপুরের পদ্মা নদীর সুরেশ্বর এলাকা। তীরে নোঙর করে রাখা শত শত জেলে নৌকা। জাল মেরামতে ব্যস্ত জেলেরা। দল বেঁধে নিচ্ছেন মাছ ধরার প্রস্তুতি। জেলেদের কর্মব্যস্ততা দেখলে বোঝার উপায় নেই ইলিশ প্রজনন নিশ্চিতে পদ্মার ২০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলছে। একের পর এক জেলে নৌকা-জাল নিয়ে ছুটছেন মাঝ নদীতে। এ যেন মাছ শিকারে জেলেদের প্রতিযোগিতা।

ভেদরগঞ্জের বেরাচাক্কি গ্রামের বাবুল আক্তার। নদী ভাঙনে হয়েছেন সর্বস্বান্ত। মাছ শিকারই তার জীবনের একমাত্র অবলম্বন। ছোট ডিঙি নৌকায় দুই শিশু ছেলে আর ভাগ্নেকে নিয়ে নেমেছেন মাছ শিকারে। সেখানেও বিধিবাম। নদীতে নামলেই দিয়ে হয় টাকা। দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার এরই মধ্যে দুই সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও মেলেনি খাদ্য সহায়তা, তাই বাধ্য হয়েই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নেমেছেন মাছ শিকারে।

ভেদরগঞ্জের জেলেবাবুল আক্তার বলেন, ‘৪০ কেজিতে তো আমাদের মাস যাবে না, খাবো কী আর কিস্তি শোধ করবো কী দিয়ে?’

বাবুল আক্তারের মতো প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে শরীয়তপুরের পদ্মা নদীর ২০ কিলোমিটার অভয়াশ্রমে চলছে অবাধে মাছ শিকার। জেলেরা আইন অমান্য করে নদীতে জাল-নৌকা অবাধে চলাচল করছেন আর এর মাঝেই চলছে প্রশাসনের লোক দেখানো অভিযান। অপরাধের কথা স্বীকার করছেন জেলেরাও।

এক জেলে বলেন, ‘ঈদে তো সবাই নতুন জামা কাপড় চায়, কিন্তু আমরা তো জেলে, আমরা দিতে পারি না।’ আরেকজন বলেন, ‘ধরতে পারলে তো চালান করে দেয়, জেল দেয়। কী করব? পেটের ধান্দায় করতেই হয়।’

তবে, ইলিশের বংশবিস্তার নির্বিঘ্ন করতে জনবল সংকট থাকলেও অভিযান সফল হচ্ছে দাবি মৎস্য কর্মকর্তার।

শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, ‘মৎস্য অধিদপ্তর একা এই জায়গায় কাজ করে না, কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশ একসাথেই কাজ করে থাকি। আমরা সমন্বিতভাবে আরো বেশি অভিযান যাতে বাস্তবায়ন করা যায়, আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

শরীয়তপুরের পদ্মা নদীর নড়িয়া থেকে চাঁদপুরের মতলব পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার নদীতে জাটকা সংরক্ষণে ৫ম অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময় শরীয়তপুরের ১৫ হাজার ৪৬৫ জেলেকে দেয়া হবে ৮০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা।

এসএইচ