পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাতে ফের বিধিনিষেধ জারি করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না পরিবারসহ নেতাকর্মী এমনকি আইনজীবীর সঙ্গেও। কারা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, নিয়ম লঙ্ঘন করে কারাগারের ভেতরে রাজনৈতিক আলোচনা করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছেন ইমরান খান। যদিও তার পরিবার বলছে, আদিয়ালা কারাগারে দুঃসহ ও নিঃসঙ্গ অবস্থায় আছেন ইমরান। একটি কক্ষে বন্দী করে রাখার হয়েছে তাকে। এমনকি এক বছরের বেশি সময় ধরে তাকে চিকিৎসা সুবিধাও দেয়া হচ্ছে না।
এমন অবস্থায় মঙ্গলবার আবারও কারাগারে দেখা করতে যান ইমরানের আরেক বোন আলিমা খান। প্রতি মঙ্গলবারই তিনি দেখা করতে যান, তবে গেল ৮ মাসে একবারও ভাইয়ের সাক্ষাত পাননি তিন। তার অভিযোগ, কারাগারে ইমরান খানের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
কারাগারে দেখা করার অনুমতি না দেয়ায় আলিমা খানের নেতৃত্বে রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। তার সঙ্গে ছিলেন দুই বোন উজমা ও নওরিন। এছাড়া এই কর্মসূচিতে যোগ দেন পিটিআই মহাসচিবসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা।
মঙ্গলবার গভীর রাতে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের কাছে পিটিআই-এর অবস্থান কর্মসূচিতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ে। দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। প্রচণ্ড শীতের রাতে একপর্যায়ে জলকামান নিক্ষেপ করে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে। বেশ কয়েকজন পিটিআই কর্মীকে আটক করে পুলিশ। ইমরান সমর্থকদের অভিযোগ, তাদের শান্তিপ্রিয় কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনা কেন্দ্র করে আদিয়ালা কারাগার এলাকায় জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কারাগারের মূল সড়ক বন্ধ করে দিয়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। আদিয়ালার আশেপাশে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বাণিজ্যিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এর আগে, গেল সপ্তাহে উজমা খানম কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করেন। ২০ মিনিটের আলোচনায় ইমরান কারাগারের ভেতরে মানসিক নির্যাতনের কথা জানান। এছাড়া, সার্বিক পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেন পাক সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে। জবাবে ইমরান খানকে মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে অভিহিত করেন সেনাপ্রধান।
সম্প্রতি ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব নিয়ে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। পিটিআই প্রধানের সঙ্গে দেখা করা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে শেহবাজ শরীফের সরকার। গেল মাসে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রীও একই দাবিতে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে ১৬ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন।





