সেতু নির্মাণে অস্বাভাবিক বিলম্ব—ঠিকাদারের গাফিলতি নাকি দুর্বল নজরদারি?

কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন সেতু
কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন সেতু | ছবি: এখন টিভি
0

কুষ্টিয়ার মিরপুর-দৌলতপুর সড়কের জিকে ক্যানেলের ওপর নির্মিত হচ্ছে ১৮ কোটি টাকার জনগুরুত্বপূর্ণ সেতু। কিন্তু মেয়াদ বাড়িয়েও নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অগ্রগতি মাত্র ৫০ শতাংশ। প্রশ্ন উঠছে এ বিলম্ব কি শুধুই প্রযুক্তিগত? নাকি দায় রয়েছে গাফিলতি ও দুর্বল তদারকির?

কুষ্টিয়া জেলা সদরের সঙ্গে মিরপুর, দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে সেতু। ২০২৩ সালে খালের ওপর নির্মিত পুরনো সেতু ভেঙে নতুন করে নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছর মে মাসে। তবে এখনও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে খাল পাড় হচ্ছেন স্থানীয়রা। চরম দুর্ভোগে শিক্ষার্থী, রোগী ও কর্মজীবী মানুষ।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘ব্রিজটা দীর্ঘদিন ধরে ধীরগতি হিসেবে পড়ে আছে। সেটা থেকে উত্তরণের কোনো উপায় দেখি না। আসলে কতদিনে কাজ শেষ হবে তা নিজেরাও জানি না।’

অন্য একজন বলেন, ‘খুব দ্রুত এ ব্রিজটা কার্যকর করা হোক। যেহেতু আমরা ভেড়ামারা দৌলতপুরের মানুষরা এ ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করি।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি, প্রকল্প তদারকিতে দায়সারা মনোভাব এবং প্রশাসনের নীরবতাই ব্রিজ নির্মাণে ধীরগতির প্রধান কারণ বলছেন স্থানীয়রা।

আরও পড়ুন:

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘তিন বছর আগে কাজ শুরু হওয়ার পরও এটা কেন হচ্ছে না, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা চাইবো খুব দ্রুত এ ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হবে।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, পুরনো সেতু ভাঙা ও বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে জটিলতা তৈরি হওয়ায় নির্মাণ কাজে দেরি হচ্ছে।

ঢাকা কংক্রিট অ্যান্ড স্টিল টেকনোলজিস লিমিটেডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আলিফ হোসেন বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য সাত মাস কাজ পিছিয়ে যায়। পরে এখানে ইলেকট্রিক পোল ছিল, তারপর পুরান ব্রিজের যে বেজ আছে সেগুলো সম্প্রসারণ করার জন্য আমাদের অনেক সময় লেগে যায়।’

অভিযোগ জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে প্রকল্পের সময়সীমা আরও এক বছর বাড়িয়ে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, ‘কারিগরি কারণে ব্রিজ নির্মাণটা একটু সময়সাপেক্ষ বিষয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি যতদ্রুত সম্ভব, ঠিকাদারকে তাগাদা প্রদান করে কাজটি সম্পন্ন করার। ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটি অনুমোদিত মেয়াদ রয়েছে।’

সড়ক ও জনপথ বিভাগের সরাসরি তদারকিতে অতিপ্রয়োজনীয় এ সেতুটি নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান- এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

এসএস