কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীর নূর মোহাম্মদ চৌধুরী বাজার থেকে মহসনিয়া পাড়া বাজার, পিএমখালী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে খুরুশকুল ইউনিয়ন অফিস পর্যন্ত এক্স-মিলিটারি রোড, আর সেখান থেকে কুলিয়া পাড়া— এই তিনটি সড়ক এখন চলাচলের জন্য প্রায় অযোগ্য।
বড় বড় ইটের খোয়া আর খানাখন্দে সয়লাব সড়কের নানা জায়গা। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে সড়কগুলোর। দেখা নেই ঠিকাদারদের। ফলে অসম্পূর্ণ সড়কগুলো পরিণত হয়েছে দুর্ভোগের উৎসে। রোগী, অন্তঃসত্ত্বা নারী কিংবা শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনই পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে।
সবচেয়ে করুণ অবস্থা খুরুশকুল ইউনিয়নের কুলিয়া পাড়া থেকে এক্স-মিলিটারি রোড পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কে। ১৮ মিটার দৈর্ঘ্যের গার্ডার সেতুটিও ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএই-এমইই-হাসনা-জেভি। ফলে বাধ্য হয়ে সরু বাঁশের সাঁকোতে যাতায়াত করছেন মানুষ।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘তিন বছর হচ্ছে ব্রিজ করতে নিয়ে বন্ধ করে রেখেছে। কেউ অসুস্থ হলে পশ্চিম পাড়া থেকে ঘুরে ঘুরে অন্য দিকে দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।’
নূর মোহাম্মদ চৌধুরী বাজার থেকে মহসনিয়া পাড়া বাজার এক হাজার ৩০০ মিটার সড়কের কাজও বন্ধ এক বছর ধরে। কাজ পেয়েছিল আসাদ এন্টারপ্রাইজ। নানা অজুহাতে তারাও দেখালো দেরীর কারণ। তবে স্থানীয়রা বলছেন, গত ৫ আগস্টের পর মাসের পর মাস দেখা মেলেনি তাদের।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘ঠিকাদার চলে গেছে। এরপর থেকে কী কারণে যে রাস্তাটা বন্ধ আছে এটা আমরা খনও পর্যন্ত জানি না।’
ঠিকাদার আসাদ উল্লাহ বলেন, ‘বৃষ্টিতে কার্পেটিং করলে একটু খারাপ। বৃষ্টিতে কার্পেটিং করলে রাস্তা টিকে না। এজন্য রোদের জন্য অপেক্ষা করছি।’
আরও পড়ুন:
পিএমখালী থেকে খুরুশকুল ইউপি অফিস পর্যন্ত ছয় হাজার ৫০০ মিটার সড়কের কাজও একই অবস্থা। কাজ পেয়েছে আলহাজ মো. ইসমাইল হোসেন নামের ঠিকাদার, কিন্তু মাঠে নেই তিনি।
তিনটি সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ কিলোমিটার। দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ প্রতিদিন এ রাস্তায় যাতায়াত করেন। তাই জনদুর্ভোগ লাঘবে বারবার অনুরোধের পরও, ঠিকাদাররা কাজ শুরু করছে না বলে জানালেন স্থানীয় চেয়ারম্যান।
পিএমখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আরিফ উল্লাহ বলেন, ‘উনারা বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে রাখছে। বর্ষা শেষ হলে তারা কাজ করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর বেশ কয়েকবার উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে কাজগুলো যেন দ্রুত হয়ে যায়।’
তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এরইমধ্যে অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। জানান, সময়মতো কাজ শেষ না করলে নেয়া হবে ব্যবস্থা।
এলজিইডি কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান বলেন, ‘ওই রাস্তা দুইটার প্রগ্রেস স্লো। এটা আমি স্বীকার করছি। কাজটা মাঝেমধ্যে শুরু করে আবার মাঝেমধ্যে বন্ধ করে ফেলে। আমি এরমধ্যে চিঠিও দিয়েছি ঠিকাদারদের। না হলে মরা কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করবো।’
এক বছর ধরে কাজ ফেলে রেখেও ঠিকাদারদের জবাবদিহিতা নেই, কর্তৃপক্ষের নজরদারিও সীমিত। ফলে ভোগান্তির শেষ নেই খুরুশকুল ও পিএমখালীর মানুষের।




