তার পরামর্শ হুবহু তুলে ধরা হলো—
প্রবাসে গিয়ে অনেকেই শারীরিক পরিশ্রম দিয়ে কাজ করতে হয়। এজন্য প্রবাসীদের সবচেয়ে কমন সমস্যা হচ্ছে এসব কাজ থেকে তৈরি হওয়া বিভিন্ন প্রকার ইনজুরি জনিত সমস্যা। এর মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা হচ্ছে কোমরে ব্যথা বা কোমরের পিএলআইডি বা স্লিপ ডিস্ক যা খুব কমন। একইভাবে মেরুদণ্ডের যেকোনো জায়গায় হাড় ক্ষয় হতে পারে বা ডিস্ক প্রলাপ্স হতে পারে, ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। প্রবাসীদের এগুলো কমন সমস্যা যা বিদেশে গিয়ে দেখা দেয়। আবার অনেক সময় ভারি জিনিস বারবার তোলার কারণেও কোমরে ইনজুরি হয়ে হাড় সরে যায় বা যাকে স্পন্ডিলোলিস্থেসিস বলা হয়।
কীভাবে বুঝবেন যে কোমর ব্যথা হচ্ছে?
অনেক ক্ষেত্রে প্রবাসীদের সেফটি জুতার পড়ার কারণে পায়ের তলায় ইনজুরি হয় এবং সেখান থেকে রোগী ব্যথায় ভোগে। এছাড়া পায়ের তলা হার বেড়ে যায়,যাতে কোমর ব্যথা তৈরি হয়। আর প্রবাসীরা যখন কাজের কারণে মাথায় বা হাতে অধিক ওজন নেয় তখন তাদের বিভিন্ন মাংস পেশির ইনজুরি দেখা দেয়। আবার বিছানায় শোবার ধরনের ভুলে থাকলেও ব্যথা তৈরি হতে পারে। মূলত শ্রমিক পেশাজীবী ক্ষেত্রে এসব ব্যথার সমস্যা বেশি দেখা যায়।
আর নিয়মিত বিভিন্ন প্যাকেটজাত খাবার ও অতিরিক্ত লাল মাংস খাবার কারণে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গিয়ে ব্যথা তৈরি হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত টেনশন, টাকা-পয়সা নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে প্রবাসীদের উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে। এতে অনেকের স্ট্রোক পর্যন্ত হয়ে যায়। যার ফলে কথা বলার সমস্যা হয়। অনেকে ক্ষেত্রে রোগী ডাক্তারকে সঙ্গে ঠিক মতো কথা বলতে পারে না। এর ফলে চিকিৎসার বিঘ্ন ঘটে, এক্ষেত্রে প্রয়োজনে দোভাষী ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশে এ বিষয়ক চিকিৎসা যারা দিচ্ছেন তাদের কাছে দেশের আত্মীয়-স্বজন পাঠিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব সমস্যার চিকিৎসা নেয়া যেতে পারে।
তবে যারা প্রবাসী আছেন তাদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে যে কাজটি করতে যাবেন সেটা আগে কনফার্ম হয়ে নিবেন। যদি কোনো কারণে যদি সে কাজ না পান, তাহলে জোর করে কাজ করতে যাবে না। আর কাজ করার আগে অবশ্যই ট্রেনিং নিতে হবে। আর ভারি কাজ করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যেমন কোমর সোজা রাখা, পরিমিত খাবার খাওয়া, কাজের ফাঁকে পানি খাওয়া, এবং ছুটির দিন বিশ্রাম নেয়া।
এর সঙ্গে প্রবাসীদের মানসিক স্ট্রেস কমাতে হবে, মনে রাখতে হবে প্রতিটি জিনিসই পূর্বনির্ধারিত। এ ক্ষেত্রে দেশের মানুষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা বেশ সাহায্য করবে। এসবের পাশাপাশি নিয়মিত হাঁটা চলাফেরা অভ্যাস, সুইমিং এবং এক্সারসাইজ করলে এসব সমস্যা অনেকাংশেই কমে আসবে।