জানাজার নামাজের নিয়ত (Niyyah of Janaza Prayer)
জানাজার নামাজে দাঁড়িয়ে প্রথমেই নিয়ত করুন। মনে মনে এই নিয়ত করবেন—
আরবি নিয়ত: نَوَيْتُ اَنْ اُؤَدِّىَ لِلّٰهِ تَعَالَى فَرْضَ الْكِفَايَةِ صَلَاةَ الْجَنَازَةِ بِاَرْبَعِ تَكْبِيْرَاتٍ مُقْتَدِيًا بِهٰذَا الْاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ
বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহি তাআলা ফারদাল কিফায়াতি সালাতাল জানাজাতি বি-আরবায়ি তাকবীরাতিন মুকতাদিয়ান বি-হাযাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি।
আরবি না জানা থাকলে বাংলায় জানাজার নিয়ত- ‘আমি জানাজার ফরজে কেফায়া নামাজ চার তাকবিরসহ এই ইমামের পেছনে কিবলামুখী হয়ে আদায়ের নিয়ত করছি।’ (Niyyah for Janaza)।
নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়, তবে মুখে বললে এভাবে বলা যায়, ‘আমি সামনে উপস্থিত হওয়া মৃতের জানাজার নামাজ এই ইমামের ইমামতিতে আদায় করছি’।
আরও পড়ুন:
১. প্রথম তাকবির (First Takbir & Sana)
জানাজার নামাজে দাঁড়িয়ে মনে মনে নিয়ত করুন—‘আমি সামনে উপস্থিত হওয়া মৃত মহিলার জানাজার নামাজ এই ইমামের ইমামতিতে আদায় করছি’। ইমামের সাথে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বাঁধবেন। এরপর সানা পড়বেন:
আরবি: سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ
উচ্চারণ: সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনারই পবিত্রতা ঘোষণা করছি এবং আপনারই প্রশংসা করছি। আপনার নাম বরকতময়, আপনার মর্যাদা অতি উচ্চ এবং আপনি ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নেই।
আরও পড়ুন:
২. দ্বিতীয় তাকবির ও দরুদ শরিফ (Second Takbir & Durood)
ইমাম সাহেব হাত না তুলে দ্বিতীয়বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলবেন। এরপর আপনি দরুদে ইব্রাহিম পড়বেন:
আরবি: اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম-মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাকতা আলা ইবরাহিম ওয়া আলা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম-মাজিদ।
অর্থ: হে আল্লাহ! উম্মি নবি মুহাম্মাদের ওপর এবং মুহাম্মাদের পরিবারের ওপর রহমত বর্ষণ করুন, যেমন রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহিমের ওপর এবং ইবরাহিমের পরিবারের ওপর। উম্মি নবি মুহাম্মাদ ও তার পরিবারকে বরকত দান করুন, যেমন ইবরাহিম ও তার পরিবারকে বরকত দান করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত, মহিমান্বিত।
আরও পড়ুন:
৩. তৃতীয় তাকবির ও জানাজার দোয়া (Third Takbir & Dua)
ইমাম হাত না তুলে তৃতীয়বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলবেন। এরপর মৃত ব্যক্তিভেদে দোয়া আলাদা হবে:
প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের জানাজার দোয়া (Dua for Adult male/Female):
আরবি: اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِ نَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَنَا اَللّٰهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلٰى الْاِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلٰى الْاِيْمَانِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা-গফিরলি হায়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িবিনা ওয়া সাগীরিনা ওয়া কাবীরিনা ওয়া যাকারিনা ওয়া উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াহতাহু মিন্না ফাআহয়িহী আলাল ইসলামি ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহ আলাল ইমান।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত ও মৃত উপস্থিত ও অনুপস্থিত, ছোট ও বড় এবং পুরুষ ও নারী সবাইকে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ আপনি আমাদের মধ্য থেকে যাদের জীবিত রেখেছেন ইসলামের ওপর জীবিত রাখেন আর যাদের মৃত্যুদান করেছেন তাদের ইমানের সঙ্গেই মৃত্যুদান করুন।
আরও পড়ুন:
৪. চতুর্থ তাকবির ও সালাম (Fourth Takbir & Salam)
চতুর্থ তাকবিরের পর হাত না তুলেই ইমামের সাথে সালাম ফেরাবেন। জানাজার নামাজে শুধু প্রথম তাকবিরে হাত তুলতে হয়, বাকিগুলোতে নয়। হাত ছাড়ার ক্ষেত্রে চতুর্থ তাকবিরের পর বা সালামের পর—উভয় নিয়মই সঠিক।
মৃত যদি ছেলেশিশু হয় (For Minor Boy)
আরবি: اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًا وَّاجْعَلْهُ لَنَا اَجْرًا وَّذُخْرًا وَّاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَّمُشَفَّعًا
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাজআলহু লানা ফারাতঁও ওয়াজআলহু লানা আজরাঁও ওয়া জুখরাঁও ওয়াজআলহু লানা শা-ফিআও ওয়া মুশাফ্ফাআ।
অর্থ: হে আল্লাহ! এই বাচ্চাকে আমাদের নাজাত ও আরামের জন্য আগে পাঠিয়ে দাও, তার জন্য যে দুঃখ, তা আমাদের প্রতিদান ও সম্পদের কারণ বানিয়ে দাও, তাকে আমাদের জন্য সুপারিশকারী বানাও, যা তোমার দরবারে কবুল হয়।
মৃত যদি মেয়েশিশু হয় (For Minor Girl)
আরবি: اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهَا لَنَا فَرْطًا وَّاجْعَلْهَا لَنَا اَجْرًا وَّذُخْرًا وَّاجْعَلْهَا لَنَا شَافِعَةً وَّمُشَفَّعَةً
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা-জআলহা লানা ফারতাও ওয়া-জআলহা লানা আজরাও ওয়া যুখরাও ওয়া-জআলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফাআন।
অর্থ: হে আল্লাহ! তাকে আমাদের অগ্রবর্তী ব্যবস্থাপক বানিয়ে দিন, তাকে আমাদের জন্য সঞ্চয় ও সওয়াবের উপকরণ বানিয়ে দিন এবং তাকে আমাদের জন্য সুপারিশকারী ও গ্রহণযোগ্য সুপারিশকারী বানান।
শিশুদের জানাজার বিশেষ দোয়া (Special Dua for Children)
মৃত শিশু হলে নিচের দোয়াগুলো পড়া সুন্নত। শিশুদের জন্য আলাদাভাবে কবরের আজাব থেকে মুক্তির দোয়া ও পরকালে তাদের মাগফিরাতের মাধ্যম হিসেবে এই দোয়াগুলো পঠিত হয়:
দোয়া-১: কবরের আজাব থেকে মুক্তির জন্য
আরবি: اَللّٰهُمَّ اَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আইজহু মিন আজাবিল কবরি।
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি এই শিশুটিকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করো। (মিশকাত ১৬৮৯)
দোয়া-২: পরকালে নাজাতের উসিলা হওয়ার জন্য
আরবি: اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا سَلَفًا وَفَرَطًا وَذُخْرًا وَاَجْرًا
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাজআলহু লানা সালাফান ওয়া ফারাতান ওয়া জুখরান ওয়া আজরান।
অর্থ: হে আল্লাহ! এই শিশুটিকে (কিয়ামতের দিন) আমাদের অগ্রবর্তী ব্যবস্থাপক, রক্ষিত ভান্ডার ও সওয়াবের কারণ বানাও। (মিশকাত ১৬৯০)
জানাজার নির্দিষ্ট দোয়া জানা না থাকলে করণীয়
যদি কারও নির্দিষ্ট দোয়াগুলো (প্রাপ্তবয়স্ক বা শিশুদের জন্য) মুখস্থ না থাকে, তবে অন্তত এই সংক্ষিপ্ত দোয়াটি পড়লেও জানাজা আদায় হয়ে যাবে:
আরবি: اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফির লিলমুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি মুমিন নারী ও পুরুষ উভয়কেই ক্ষমা করে দিন।
হাদিসের আলোকে জানাজার নামাজের ফযিলত ও গুরুত্ব
নারী বা পুরুষের জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করা এবং মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করার বিশাল সওয়াব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন। নিচে এ সংক্রান্ত কয়েকটি নির্ভরযোগ্য হাদিস দেওয়া হলো:
১. বিশাল সওয়াব বা কিরাত লাভ (Rewards of Janaza): হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— "যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের জানাজায় শরিক হয়ে নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে, সে এক 'কিরাত' সওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি দাফন শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে, সে দুই 'কিরাত' সওয়াব পাবে।" জিজ্ঞাসা করা হলো, দুই কিরাত কী? তিনি বললেন, "দুইটি বিশাল পাহাড়ের সমান সওয়াব।" (সহিহ বুখারি: ১৩২৫, সহিহ মুসলিম: ৯৪৫)
২. মৃত ব্যক্তির জন্য সুপারিশ (Intercession for the Deceased): হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন— "যদি কোনো মৃত ব্যক্তির জানাজায় এমন একদল মুসলিম (কমপক্ষে ১০০ জন) অংশগ্রহণ করে যারা সবাই তার জন্য সুপারিশ (দোয়া) করে, তবে তাদের সুপারিশ অবশ্যই কবুল করা হবে।" (সহিহ মুসলিম: ৯৪৭)
৩. তিন কাতারের ফযিলত (Virtue of Three Rows): হযরত মালিক ইবনে হুবায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— "যে কোনো মুসলিম মারা যাওয়ার পর যদি তিন কাতার পরিমাণ মানুষ তার জানাজার নামাজ আদায় করে, তবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।" (সুনানে আবু দাউদ: ৩১৬৬, তিরমিজি: ১০২৮)
৪. জানাজার সময় ইমামের দাঁড়ানোর স্থান (Position of Imam): হযরত সামুরা বিন জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত— "আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে একজন নারীর জানাজা পড়েছিলাম যিনি প্রসবকালীন অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। রাসুল (সা.) তার জানাজার নামাজের সময় লাশের মাঝবরাবর সোজা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।" (সহিহ বুখারি: ১৩৩১, সহিহ মুসলিম: ৯৬৪)
জানাজার নামাজ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি মৃত ব্যক্তির জন্য জীবিতদের পক্ষ থেকে শেষ উপহার ও মাগফিরাতের পরম আবেদন। বিশেষ করে নারীর জানাজার ক্ষেত্রে পর্দা এবং সঠিক নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী সঠিকভাবে জানাজা আদায় করলে যেমন মৃত ব্যক্তি আল্লাহর রহমত ও সুপারিশপ্রাপ্ত হন, তেমনি অংশগ্রহণকারী মুসল্লিরাও বিশাল সওয়াবের অধিকারী হন।
তাই আমাদের উচিত জানাজার সঠিক মাসয়ালা-মাসায়েল এবং দোয়াগুলো ভালোভাবে শিখে রাখা। বিশেষ করে নিজের পরিবারের কোনো সদস্যের শেষ বিদায়ে যেন আমরা বিচলিত না হয়ে সঠিক পদ্ধতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতটি সম্পন্ন করতে পারি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল মৃত মুমিন নর-নারীকে ক্ষমা করে দিন এবং আমাদের সকলকে সুন্নাহ মোতাবেক জীবন ও মৃত্যু নসিব করুন। আমিন।
জানাজার নামাজের সঠিক নিয়ম ও দোয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর-FAQ
প্রশ্ন: জানাজার নামাজে কয়টি তাকবির দিতে হয় এবং হাত কি প্রতিবার তুলতে হয়?
উত্তর: জানাজার নামাজে মোট ৪টি তাকবির দিতে হয়। শুধুমাত্র প্রথম তাকবিরের সময় হাত কান পর্যন্ত তুলে বাঁধতে হয়, বাকি ৩টি তাকবিরে হাত তোলার প্রয়োজন নেই।
প্রশ্ন: জানাজার নামাজের সানা কোনটি?
উত্তর: জানাজার প্রথম তাকবিরের পর এই সানাটি পড়তে হয়— সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
প্রশ্ন: মৃত ব্যক্তি মহিলা হলে জানাজার দোয়ায় কি কোনো পরিবর্তন হয়?
উত্তর: প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের জানাজার দোয়া একই। তবে মৃত যদি অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু হয়, তখন দোয়া আলাদা হয়।
প্রশ্ন: জানাজার নামাজে রুকু বা সিজদা আছে কি?
উত্তর: না, জানাজার নামাজে কোনো রুকু বা সিজদা নেই। এটি দাঁড়িয়ে আদায় করতে হয়।
প্রশ্ন: জানাজার দোয়া মুখস্থ না থাকলে কি নামাজ হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, নামাজ হয়ে যাবে। দোয়া মুখস্থ না থাকলে কমপক্ষে এই সংক্ষিপ্ত দোয়াটি পড়া যায়— আল্লাহুম্মাগফির লিলমুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত (হে আল্লাহ! মুমিন নর-নারীদের ক্ষমা করুন)।
প্রশ্ন: মৃত ব্যক্তি ছেলেশিশু হলে কোন দোয়া পড়তে হয়?
উত্তর: মৃত ছেলেশিশু হলে এই দোয়াটি পড়তে হয়— আল্লাহুম্মাজআলহু লানা ফারাতঁও ওয়াজআলহু লানা আজরাঁও ওয়া জুখরাঁও ওয়াজআলহু লানা শা-ফিআও ওয়া মুশাফ্ফাআ।
প্রশ্ন: জানাজার নামাজে কাতার সংখ্যা কেমন হওয়া উচিত?
উত্তর: জানাজার নামাজে কাতার সংখ্যা ৩, ৫, ৭—এভাবে বিজোড় হওয়া সুন্নত। লোক কম হলেও ৩টি কাতার করার চেষ্টা করা উত্তম।
প্রশ্ন: জানাজার নামাজে ইমাম কোথায় দাঁড়াবেন?
উত্তর: মৃত ব্যক্তি পুরুষ হলে ইমাম তার মাথার সোজাসুজি এবং নারী হলে তার দেহের মাঝবরাবর সোজাসুজি দাঁড়াবেন।
প্রশ্ন: জানাজার নামাজে সালাম ফেরানোর নিয়ম কী?
উত্তর: চতুর্থ তাকবিরের পর কোনো দোয়া না পড়ে সরাসরি ডানে ও বামে সালাম ফেরাতে হয়। সালামের আগে বা পরে হাত ছাড়া—উভয় নিয়মই সঠিক।
প্রশ্ন: জানাজার নামাজ কী জুতা পরে পড়া যায়?
উত্তর: যদি জুতা এবং নিচের মাটি উভয়ই পবিত্র থাকে, তবে জুতা পরে জানাজা পড়া জায়েজ। তবে সন্দেহ থাকলে জুতা খুলে জুতার ওপর দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া নিরাপদ।
প্রশ্ন: মৃত মেয়েশিশু হলে কোন দোয়া পড়তে হয়?
উত্তর: মেয়েশিশু হলে দোয়ায় সামান্য পরিবর্তন হয়— আল্লাহুম্মা-জআলহা লানা ফারতাও ওয়া-জআলহা লানা আজরাও ওয়া যুখরাও ওয়া-জআলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফাআন।
প্রশ্ন: জানাজার নামাজের নিয়ত মুখে বলা কি জরুরি?
উত্তর: না, নিয়ত মূলত মনের সংকল্প। মনে মনে জানাজার নিয়ত করাই যথেষ্ট। তবে মুখে বললে উত্তম।
প্রশ্ন: জানাজার নামাজে কী সুরা ফাতিহা পড়তে হয়?
উত্তর: হানাফি মাজহাব অনুযায়ী জানাজায় সুরা ফাতিহা পড়া জরুরি নয়, সানা পড়াই যথেষ্ট। তবে দোয়া বা প্রশংসার নিয়তে সুরা ফাতিহা পড়া জায়েজ।
প্রশ্ন: জানাজার নামাজে দেরি করে পৌঁছালে করণীয় কী?
উত্তর: আপনি যদি মাঝপথে শরিক হন, তবে ইমামের পরবর্তী তাকবিরের জন্য অপেক্ষা করবেন। ইমাম সালাম ফেরানোর আগে আপনার ছুটে যাওয়া তাকবিরগুলো শুধু মনে মনে (বা মুখে) বলে নেবেন।
প্রশ্ন: ফরজে কেফায়া নামাজ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: জানাজার নামাজ হলো ফরজে কেফায়া। অর্থাৎ, এলাকার কিছু লোক আদায় করলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু কেউ না পড়লে সবাই গুনাহগার হবে।





