নির্বাচন–গণভোটের দিনক্ষণ চূড়ান্তে ইসির প্রস্তুতি

জাতীয় সংসদ ভবন, ইসি সচিব আখতার আহমেদ
জাতীয় সংসদ ভবন, ইসি সচিব আখতার আহমেদ | ছবি: এখন টিভি
1

ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে হতে যাচ্ছে আসন্ন সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল। ইসির পরবর্তী কমিশন সভাতেই চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে ভোটের আনুষ্ঠানিক এ দিনক্ষণ। এখন টিভির সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব বিষয়ে স্পষ্ট করেছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ। নির্বাচন বিশ্লেষকদের ধারণা- আবহাওয়া পরিস্থিতি ও ছুটির দিনের সঙ্গে মিলিয়ে ৮ কিংবা ১২ ফেব্রুয়ারিই হতে পারে নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন।

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ এবং ডিসেম্বরের শুরুতেই তফসিল। এমন পরিকল্পনা ধরে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত হতে থাকলেও নতুনভাবে যুক্ত হওয়া গণভোটে ইসির সিলেবাস বেড়ে গেছে। তাই সকল প্রস্তুতির শেষভাগে এসে এখন আলোচনার বিষয়- কবে হবে তফসিল ঘোষণা?

এখন টিভির সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় নির্বাচন কমিশন সচিব অনেকটা স্পষ্ট করলেন তফসিলের সময়সীমা। এতদিন ডিসেম্বরের শুরুর কথা বলা হলেও- এখন কমিশনের পরিকল্পনায় ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ। অর্থাৎ আগামী ৮ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের যেকোনো দিন ঘোষণা করা হতে পারে সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল।

আখতার আহমেদ বলেন, ‘কোনো কাজ তো আটকে নেই। ওখানে সিদ্ধান্তের পদ্ধতি হচ্ছে দুটি। কমিশন সভা করে আর ফাইলে মুভ করে। যথেষ্ট চেষ্টা করা হচ্ছে যেন, জিনিসগুলো নিয়ে দ্রুত কাজ করা যায়। সেজন্য অনেক ফাইলই আমরা ক্লিয়ার করে নিচ্ছি।’

এ যাবত অনুষ্ঠিত ১২টি সংসদ নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তফসিল ঘোষণার দিন থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দুই মাসের বেশি এবং সর্বনিম্ন এক মাসের মত ব্যবধান ছিল। যদিও রেওয়াজ অনুযায়ী, ৪৫ দিনের ব্যবধান রেখেই যেকোনো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। এবার আলোচনায় আছে- ভোটগ্রহণের আগ পর্যন্ত ৬০ দিন হাতে সময় রেখে তফসিল ঘোষণা করা হবে। সেক্ষেত্রে ভোটের সময়সীমা ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে।

আখতার আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনটা হতে হবে আগামী রোজার আগে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে। সে অনুযায়ী মিনিমাম ৬০ দিন আগে আমরা তফসিল করবো। তাহলে আমাদের এটা ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই হতে হবে। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে। আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকবে না।’

আরও পড়ুন:

আলোচনায় আছে ৮ কিংবা ১২ ফেব্রুয়ারি হতে পারে ভোটের জন্য ভালো সময়। নির্বাচন বিশ্লেষকরাও বলছেন, ভোটের দিনক্ষণ নির্ধারণে রোববার বা বৃহস্পতিবারকে বেছে নেয়ার নজিরই বেশি।

নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী বলেন, ‘রোববারই যদি হয়, রোববার ছুটি। কিন্তু সোমবারে তো অফিস-আদালত। ভোট দিতে যারা দেশে যাবে, তারা ভোট দিয়ে আবার ফিরে আসার পরেরদিন ওয়ার্কিং ডে। কিন্তু বৃহস্পতিবারে হলে ওই বেনিফিটটা পাওয়া যায়। সুষ্ঠু নির্বাচনটা পাওয়ার জন্য সে সময়টাই দেয়া প্রয়োজন আসলে।’

নির্বাচন বিশ্লেষক আব্দুল আলীম বলেন, ‘৬০ দিন আগে তফসিল দেয়া দরকার। কারণ তফসিল ঘোষণার পরে প্রচুর কাজ থাকে। নির্বাচন কমিশনকে প্রচুর কার্যক্রম করতে হয়। যাচাই-বাছাই থেকে শুরু করে প্রচুর কাজ করতে হয়। এ প্রক্রিয়া যেন সুন্দর হয় সেজন্য সময়টাকে বাড়ানো দরকার।’

তারা বলছেন, এবার যেহেতু সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোটও আয়োজন করতে হবে, তাই জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা তৈরি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে বিশেষভাবে নজরদারি রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।

এসএস