২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন শুরু হলে বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয় বহু মানুষ। ওই বছরের এপ্রিলে ইউক্রেনীয়দের জন্য মানবিক কর্মসূচি চালু করে যুক্তরাষ্ট্র। যার আওতায় প্রথম দুই বছরে ইউক্রেনের প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও কাজের সুযোগ পায়।
তবে ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই অভিবাসন নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনেন। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ইউক্রেনের মানবিক কর্মসূচির আবেদন ও নবায়ন প্রক্রিয়া স্থগিত করে ট্রাম্প প্রশাসন। গেল ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বিতর্কিত ওভাল অফিসের বৈঠকের পর এই কর্মসূচি বাতিলের হুমকিও দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে শেষ পর্যন্ত বাতিল না করলেও বিষয়টি পুনর্বিবেচনায় রেখে দেন।
গেল মার্চে এ কর্মসূচির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনের ঝুঁকিতে পড়েছেন অন্তত ২ লাখ ইউক্রেনীয়। তারা হারিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাস এবং কাজের অনুমোদন। ভিসার মেয়াদ না থাকায় চাকরি হারানোর পাশাপাশি বন্ধ হয়ে গেছে স্বাস্থ্য বীমাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় আছেন তারা।
আরও পড়ুন:
এখন পর্যন্ত ইউক্রেনীয়দের মাত্র ১ হাজার ৯০০টি নবায়ন আবেদন গ্রহণ করেছেন মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা। শুধু তাই নয়, মানবিক কর্মসূচি নবায়নে অতিরিক্ত ১ হাজার ডলার ফি ধার্য করা হয়েছে। তারপরও পুরো প্রক্রিয়াটি আটকে রেখেছে হোয়াইট হাউজ।
ট্রাম্পের অভিবাসী দমন অভিযানে নির্বাসনের ঝুঁকিতে ৩৫ বছর বসয়ী ইউক্রেনের ক্যাটেরিনা। যুদ্ধে কিয়েভে ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়ে পড়েছেন হুমকিতে। ট্রাম্প প্রশাসনের আইনি জটিলতায় হারিয়েছেন চাকরি। ইউক্রেনে ফিরে যাওয়ার পথও বন্ধ।
ইউক্রেনের অভিবাসী ক্যাটেরিনা বলেন, ‘এটি খুবই ভীতিকর পরিস্থিতি যেখানে জীবন নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। ইউক্রেনে ফিরেও যে নিরাপদ থাকবো বা বোমার আঘাতে মারা যাব না তার নিশ্চয়তা নেই।’
তার মতো আরও অনেক ইউক্রেনীয় উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। এমন অবস্থায় অনেকে কানাডা, ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকায় পাড়ি জমানোর পরিকল্পনা করছেন।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার তথ্য মতে, যুদ্ধে প্রায় ৬ লাখ ইউক্রেনীয় বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হয়েছেন। যাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ পাড়ি জমিয়েছেন ইউরোপে।




