গেলো ২১ মাসে পাঁচবার ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী পদে পরিবর্তন এসেছে । ফ্রাসোঁয়া বাইরু থেকে সেবাস্তিয়ান লেকর্নু কেউ থিতু হতে পারছেন না ফ্রান্সের সরকার ব্যবস্থায়। এতে মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশটির রাজনৈতিক ব্যবস্থা। গত (সোমবার, ৬ অক্টোবর) নিজের মন্ত্রিসভা গঠনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ম্যাক্রোর ঘনিষ্ঠ সেবাস্তিয়ান লেকর্নু। শুধু নিজে নয়, পুরো মন্ত্রিসভা পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর কাছে জমা দেন।
বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী লেকার্নুকে উদ্ভূত সংকট উত্তরণের পথ খুঁজতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসার নির্দেশ দিয়েছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। আগামী বুধবার পর্যন্ত তাকে সময় দেয়া হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর) দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে লেকর্নুর।
কয়েক সপ্তাহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার পর সোমবার মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেন লেকর্নু। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। দেশটির জাতীয় পরিষদের বেশ কয়েকটি দলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তারা ভোটের মাধ্যমে মন্ত্রিসভা বাতিলের হুমকি দেন। এছাড়াও, বড় বিপত্তির জন্ম দেয়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মায়েরের নাম ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। তবে ঘন ঘন প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তনের ঘটনায় হতাশ ফ্রান্সের সাধারণ জনগণ ।
আরও পড়ুন:
ফ্রান্সের এক বাসিন্দা বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে তামাশা চলছে। বর্তমানে এটি একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। যারা রাজনীতি করতে আগ্রহী বা রাজনীতির মাধ্যমে সমাধান খুঁজে তারা আস্থা হারাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে রাজনীতিবিদদের মনোভাবে পরিবর্তন এসেছে। আগে অন্যের কথা শোনার প্রবণতা ছিলো। কিন্তু এখন সবকিছুতে নিজের মনোভাব চাপিয়ে দেয়ার একটা অভ্যাস তৈরি হয়েছে।’
ফ্রান্সের রাজনৈতিক সংকটের সূত্রপাত ২০২৪ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। নির্বাচনে বামপন্থি জোট, দক্ষিণপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালি এবং ম্যাক্রোঁর মধ্য-ডানপন্থি জোট বিভক্ত হয়ে পড়ে। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় প্রতিটি পক্ষই। এছাড়া, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চাপ ও ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ম্যাক্রোঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এরইমধ্য বেশ কয়েকটি দল ম্যাক্রোঁর পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে। দাবি করছে আগাম নির্বাচনের।
দেশটির ডানপন্থি নেতা ম্যারিন লে পেন বলেন, ‘আমরা রসিকতার শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। ফ্রেঞ্চ নাগরিকরা বিরক্ত। তবুও ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও তার দল দেশকে জটিল অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
যেহেতু লেকর্নুকে বুধবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাই এ সময়ের মধ্যে তিনি ব্যর্থ হলে বিকল্প তিনটি পথ খোলা রয়েছে ম্যাক্রোঁর জন্য। নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ, জাতীয় পরিষদ ভেঙ্গে দেয়া কিংবা নিজের পদত্যাগের মতো বড় সিদ্ধান্তও নিতে পারেন তিনি।





