বাংলাদেশ স্বাধীনের পর থেকে কয়েক দফায় মিয়ানমারের জান্তা সরকারের জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়ে কক্সবাজারে অনুপ্রবেশ করেছে সেখানকার নিপীড়িত মানুষ। সবশেষ ২০১৭ সালে স্রোতের মতো লাখ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন প্রায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। যার বেশির ভাগই ২০১৭ সালে এসেছিল রাখাইন রাজ্য থেকে।
বাংলাদেশের কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের পেছনে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে সরকারকে। যা বিভিন্ন দাতা সংস্থার সহযোগিতায় করা হয়। তবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার টাকা ছাড়ে কিছুটা উদাসীন মনোভাবে শঙ্কায় বাংলাদেশ। একইসঙ্গে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নেয়ায় দিন দিন ঝুঁকি বাড়ছে বাংলাদেশের।
এ অবস্থায় গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনের জন্য সব সদস্য রাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। তারই ধারাবাহিকতায় এবছর আগস্টে কক্সবাজারে একটি প্রস্তুতিমূলক সম্মেলন আয়োজন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কূটনীতিক ও দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদদের অংশগ্রহণে সেই সম্মেলন থেকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করতে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়।
আরও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, ৩০ সেপ্টেম্বরে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক থেকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন, মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা, মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। জাতিসংঘ অধিভুক্ত শতাধিক দেশের প্রতিনিধিদের সামনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য চলমান সমস্যার একটি স্থায়ী ও প্রকৃত সমাধান খুঁজে বের করতে পথনির্দেশিকা চাইবেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘পুরো ফোকাসটা দেয়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্রাইসিসটা আবার ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেটিক এপার্টসের একটা ফোর ফ্রন্টে আনা। এটা যেন আবার মানুষ, পুরো ইন্টারন্যাশনাল প্রেস, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাক্টর্সরা যেন এটাকে নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবে।’
আরও পড়ুন:
রোহিঙ্গা সম্মেলনে অংশ নেবেন বিএনপি জামায়াত ও এনসিপি শীর্ষ নেতারাও। যেখানে তারাও বিশ্ব সম্প্রদায় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরবেন। তবে সম্মেলনে চীন ও মায়ানমার সরকারের প্রতিনিধি থাকবেন কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেননি প্রেস সচিব।
শফিকুল আলম বলেন, ‘তারা তো নিউ ইয়র্কে আসতে পারছেন না। তাদের কথাটা যেন নিউ ইয়র্কে আসে, তারা যা যা বক্তব্য দিয়েছেন সেটা পুরোটা লিপিবদ্ধ করে এখানে নিয়ে আসা হচ্ছে।’
তিনি জানান, ফিলিস্তিন, ইউক্রেন, সিরিয়াসহ দেশে দেশে নানা অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ইস্যু অনেকটাই আড়ালে চলে গেছে। জাতিসংঘের এ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পুনরায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে ওয়াকিবহাল হবে বলেও মনে করে বাংলাদেশ।





