জামায়াতকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের পহেলা আগস্ট একটি বৃহত্তর বেঞ্চ জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে রায় দেয়।
তবে সেই রায়ে তিন বিচারপতির মধ্যে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জামায়াতের নিবন্ধন বহাল রাখার পক্ষে রায় দেন। এটি আদালতের এখতিয়ার নয় বলেও পর্যবেক্ষণ দেন বিচারপতি।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হলে চেম্বার আদালত সাড়া না দিয়ে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি জন্য পাঠায়।
তবে প্রায় এক যুগেও আপিল বিভাগ জামায়াতের নিবন্ধনের মামলাটি নিষ্পত্তি করেনি। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আইনজীবীর অনুপস্থিতি দেখিয়ে আপিল খারিজ করে দেয়া হয়। এরপর মামলার আর কোনো অগ্রগতি ছিল না।
গেল বছরে ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের শাসনের অবসান ঘটায় ঐ বছর ২২ অক্টোবর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করে জামায়াত।
এ পর্যন্ত কয়েক বার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় এলেও এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। তবে আপিলের আংশিক শুনানি শেষ হয়েছে।
ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনের পরিকল্পনা রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে জামায়াত কেন নিবন্ধন ফিরে পাচ্ছে না?
কেনো দেরি হচ্ছে নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি হবে। আর তাতেই নিবন্ধন ফিরে পাবে জামায়াত।
জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘হাইকোর্ট ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত। হাইকোর্টের যিনি সিনিয়র বিচারপতি ছিলেন তিন জনের মধ্যে তিনি নিবন্ধন বাতিল করেনি। নিবন্ধন পাওয়ার জন্য সকলেই আকাঙ্ক্ষিত। সকলেই মনে করছেন দ্রুতই এইটা পাওয়া উচিত। যেহেতু এইটা আদালতের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। তাই নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
নিবন্ধনের আইনি জটিলতা শিগগিরই কেটে যাবে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াত পুরোদমে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। রাজনীতিতে জামায়াত এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী।
কেন্দ্রীয় কমিটির আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার সবগুলো শর্ত পূরণ করার পরেও আমাদের নিবন্ধন বাতিল করেছে। এইটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়েই সরকার এইটা করেছে। ষড়যন্ত্র চক্রান্ত জামায়াতের বিরুদ্ধে সবসময় ছিল এখনো আছে।’
গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে রাজনৈতিক দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে জামায়াত। দলটির নেতারা এই দাবি করে বলেন, আগামীতে জামায়াতের বিরুদ্ধে আর কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না।





