''বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি; পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।''--- কবি জীবনানন্দ দাশের প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্যের বর্ণনা যেন তার যথার্থতা খুঁজে পায় পটুয়াখালীর নৈসর্গিক গঙ্গামতি সৈকতের সমুদ্র কলতানে। সৈকতের সূর্যোদয় ও অস্তের বিরল দৃশ্য উপভোগে প্রকৃতি প্রেমীদের পছন্দের তালিকায় থাকে এ স্থান। সমুদ্রের এক পাশে নির্জন বনানীর মাঝে সহজেই হারায় পর্যটক মন।
একজন পর্যটক বলেন, ‘এই জায়গাটার বিশেষত্ব হলো, এখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উভয়ই উপভোগ করা যায়।’
আরেকজন বলেন, ‘কুয়াকাটার চেয়েও এই জায়গাটা অধিক উপভোগ্য, যারা এখানে এসেছে তারা এটা ভাল করেই জানে।’
জেলেদের মাছ শিকারের ব্যস্ততা ও জেলে পল্লীর দৃশ্যে চোখ আটকাবে যে কারো। বিস্তীর্ণ এই সৈকতের রাবনাবান নদের মোহনায় লাল কাঁকড়ার বিচরণ পর্যটকদের দেয় বাড়তি স্বাদ। তবে পর্যটকদের জন্য এখানে নেই পর্যাপ্ত অবকাঠামো, যাতায়াত ও আবাসন ব্যবস্থা। এই এলাকায় বাণিজ্যিক সুবিধা ও সেবা নিশ্চিত হলে পর্যটন খাতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে সরকার এমন দাবি পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের।
একজন পর্যটক বলেন, ‘এখানে থাকার তেমন ভাল কোন জায়গা নেই। রাস্তার অবস্থা ভালো না, খাবারের মানও তেমন ভালো না।’
উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সড়ক উন্নয়ন ও সৈকতকে দর্শনীয় স্পট হিসেবে গড়তে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ইতোমধ্যেই ৫০০ মিটার ইটের রাস্তার কাজ করেছি মোটরসাইকেল চলাচলের সুবিধার জন্য। যেহেতু ভোরবেলা পর্যটকদের চলাচল থাকে তাই আমরা ৮টি সোলার স্ট্রিট লাইট দিয়েছি আলোক স্বল্পতা দূর করার জন্য। আমরা একটি বক্স কালভার্ট করে দিচ্ছি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে, সেখানে কাঠের ব্রিজ দিয়ে চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।’
সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে গঙ্গামতি সমুদ্র সৈকতকে ভ্রমণোপযোগী করে তোলা হলে পর্যটন খাতে শত কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।