৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করে সাধারণ জনগণ ও বিরোধীদের তোপের মুখে মাত্র ৬ ঘণ্টা পর তা প্রত্যাহার। এরপর জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে ৭ ডিসেম্বর পার্লামেন্টের অভিশংসন থেকে অল্পের জন্য রেহাই পেলেও শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে ১৪ ডিসেম্বর আইন প্রণেতাদের ভোটে পার্লামেন্টে অভিশংসিত হতেই হলো দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে।
এর মধ্য দিয়ে গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়লো দক্ষিণ কোরিয়া। কারণ অভিশংসিত হলেও এখনও ক্ষমতাচ্যুত হননি ইউন সুক ইওল। আপাতত তার প্রেসিডেনশিয়াল ক্ষমতা স্থগিত করে প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সুকে এই পদে ভারপ্রাপ্ত করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে দেশকে স্থিতিশীল রাখতে আমি আমার সব শক্তি এবং প্রচেষ্টাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো।’
আইনি প্রক্রিয়ায় এখনও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার সম্ভাবনায় হাল ছাড়তে নারাজ অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ই্ওল। কারণ দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে পুরোপুরি ক্ষমতাচ্যুত করা হবে কি-না, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সেদেশের সাংবিধানিক আদালত।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল বলেন, ‘আমি কখনই হাল ছাড়ব না। আমি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দেশের জন্য আমার সেরাটা করব। আমার জন্য তিরস্কার, উৎসাহ এবং সমর্থন সব মেনে নিয়েই এগিয়ে যাবো। তবে আমি হতাশ যে, এখন পর্যন্ত সব প্রচেষ্টা বৃথা যাবে।’
পার্লামেন্টে অভিশংসনের ছয় মাসের মধ্যে সাংবিধানিক আদালতকে রায় দিতে হবে যে, ইউন প্রেসিডেন্ট হিসাবে থাকবেন নাকি বরখাস্ত হবেন। এমন পরিস্থিতি ও ইউন সুক ইওলের হাল না ছাড়া শক্ত বক্তব্যে বিরোধীদের মাঝে অস্থিরতা কাজ করছে। এ অবস্থায় দ্রুত ইওলের অপসারণ প্রক্রিয়া সম্পন্নের দাবি জোরালো হচ্ছে।
চরম রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ইউনের বিষয়ে আলোচনা করতে আগামী সোমবার বসতে যাচ্ছে দেশটির সাংবিধানিক আদালত। যদি শেষপর্যন্ত সাংবিধানিক আদালত অভিশংসনের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন, তাহলে সেই রায় দেয়ার পর থেকে পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে দক্ষিণ কোরিয়ার। অর্থাৎ, এখনও ক্ষমতায় থাকা না থাকার মাঝে ঝুলছেন ইউন সুক ইওল। আইনি লড়াইয়ে ক্ষমতায় টিকে গেলে দেশটিতে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেবে বলে শঙ্কা বিশ্লেষকদের।