দুই মাসেরও কম সময় হোয়াইট হাউসে থাকবেন জো বাইডেন। ক্ষমতা ছাড়ার শেষ মুহূর্তে ইউক্রেনকে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। চলতি মাসে রাশিয়ায় হামলার জন্য জেলেনস্কি প্রশাসনকে আতাকামাস মিসাইল ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন তিনি। এবার কিয়েভের জন্য প্রস্তুত করছেন সাড়ে ৭২ কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, ল্যান্ড মাইন, ড্রোন, সিঙ্গার মিসাইল ক্লাস্টার বোমা ও হিমার্স রকেট। ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনকে ৫ হাজার ৬শ' কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ১৮ করতে জেলেনস্কিকে চাপ দিচ্ছেন জো বাইডেন। বর্তমানে যা ২৫ বছর।
এদিকে সংঘাত নিরসনে কেইথ কেলোগকে ইউক্রেনের বিশেষ দূত হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাবেক এই মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা ট্রাম্পের আগের প্রশাসনে হোয়াইট হাউস সিকিউরিটি কাউন্সিলের চিফ অফ স্টাফের দায়িত্ব সামলেছেন।
৮০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি চলতি বছর শুরুতে ফার্স্ট পলিসিতে লেখা একটি কলামে দাবি করেন, মার্কিন সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করতে হবে। পাশাপাশি রাশিয়া আক্রমণ চালাবে না, বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। পিছিয়ে দিতে হবে কিয়েভকে ন্যাটোর সদস্যপদ প্রদানের সময়সীমা। এভাবেই দুপক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনা সম্ভব। এদিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।
জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার উপরাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পোলিয়ান্সকি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন সংঘাত নিরসনের চেষ্টা করছে। ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা বন্ধ করা মৃত্যুদণ্ডের শামিল হিসেবে গণ্য হবে। আশা করি সংঘাত বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসন এই পদক্ষেপ নিবে।’
জো বাইডেনের একের পর এক আগ্রাসী সিদ্ধান্তে কিছুটা উদ্বিগ্ন রাশিয়া। শঙ্কা রয়েছে, ইউক্রেনকে পারমাণবিক বোমা সরবরাহ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মস্কো বলছে, সম্ভাব্য এই সিদ্ধান্ত পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘ইউক্রেনের পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করা পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা ইউক্রেন ও পশ্চিমাদের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। বিপর্যয়ের মুখ থেকে বিশ্বকে সরিয়ে আনতে পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন না করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।’
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্যা ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন বলছে, প্রায় ৩ বছরের যুদ্ধে ৫ লাখ সেনা হারিয়েছে ইউক্রেন। অথচ ফেব্রুয়ারিতেই জেলেনস্কি দাবি করেন, কিয়েভের নিহত সেনা সংখ্যা মাত্র ৩১ হাজার। এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নরডিক ও বাল্টিক দেশ এবং পোল্যান্ড।