আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসের ক্ষমতা গ্রহণের আগেই নিজের মন্ত্রিসভা গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরইমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোতে নিয়োগ পেয়েছেন বেশ কয়েকজন।
ট্রাম্পের মন্ত্রিসভায় ডাক পাওয়া অন্তত নয় জনকে বোমা হামলা ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। এই তালিকায় প্রতিরক্ষা, আবাসন, কৃষি, শ্রম মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘে মনোনীত মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ হোয়াইট হাউজ কর্মকর্তারাও আছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত ও বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে এসব হুমকি দেয়া হয়। পাশপাশি ভুয়া ফোনকল ও পুলিশ দিয়ে হয়রানি করারও হুমকি আসে।
দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই জানায়, এসব ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরইমধ্যে তদন্তে নেমেছে মার্কিন পুলিশ বিভাগ। তবে কে বা কারা এই ধরনের হুমকি দিচ্ছে তা বিস্তারিত জানা যায়নি। মনোনীত ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরইমধ্যে বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে জানানো হয়েছে। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসনের অ্যাটর্নি জেনারেলের মনোনয়ন পাওয়া ম্যাট গেটজও হুমকি পাওয়ার পর সরে দাঁড়ান।
ক্ষমতা গ্রহণের আগেই নানামুখী চাপ ও বিতর্কের মুখে পড়তে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। এবার ট্রাম্পের শুল্কনীতির ঘোষণায় চটেছে প্রতিবেশি দেশ মেক্সিকো। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি লঙ্ঘন ও আঞ্চলিক বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর অভিযোগ তুলেছে মেক্সিকান সরকার। ট্রাম্প এমন পদক্ষেপ নিলে মেক্সিকোও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করবে বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবাউম।
শুধু তাই না মেক্সিকোতে স্থাপিত মার্কিন কোম্পানিগুলো থেকে প্রায় চার লাখ মার্কিন নাগরিক চাকরি হারাবেন। এছাড়া নতুন শুল্কনীতিতে একটি নতুন গাড়ি কিনতে খরচ করতে হবে অতিরিক্ত তিন হাজার মার্কিন ডলার। এদিকে অভিবাসীদের ঢল থামাতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আশ্বস্ত করেছেন মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবাউম। পাশাপাশি সীমান্তে মাদক চোরাচালান বন্ধ নিয়েও ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
এদিকে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের আগেই অভিবাসীদের একটি দল সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশের চেষ্টা করছে। ক্রিসমাসের আগে তারা সীমান্ত অতিক্রম করতে চায়।
একজন অভিবাসী বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের রক্ষার জন্য অনেক অভিবাসীকে ফেরত পাঠাচ্ছে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। দেখি কি হয় শেষ পর্যন্ত।'
অন্য একজন অভিবাসী বলেন, 'সৃষ্টিকর্তার ওপর আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস আছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছব এবং ট্রাম্প আমাদের সহায়তা করবেন।'
এদিকে ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে ট্রুডো সরকারের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন কানাডার ১০ প্রদেশের নেতারা। সীমান্তে মাদক চোরাচালান বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাসও দিয়েছে দেশটি। শুল্কনীতির চ্যালেঞ্জগুলো সম্মিলিতভাবে মোকাবিলার কথা জানান কানাডীয় অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড।
মার্কিন ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুল্ক বাড়ালে পণ্যের দাম বাড়বে এবং অতিরিক্ত এই খরচ গ্রাহকদেরই বহন করতে হবে। অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক দুই দিক থেকেই এখন অনেকটা চাপে আছে ট্রাম্প প্রশাসন।