বিদেশে এখন
0

ইসরাইলি ভূখণ্ডে ইরানের সম্ভাব্য অভিযান ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা

ইসরাইলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরানের সম্ভাব্য অভিযান ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা। এপ্রিল ও অক্টোবরের হামলা থেকেও এবারের হামলাটি শক্তিশালী হতে পারে। ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কর্পসের সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীও যোগ দিতে পারে এবার। তেহরানের হামলার পর তেল আবিব পাল্টা হামলা চালালে আরেক যুদ্ধের ফ্রন্টলাইন তৈরির শঙ্কা মধ্যপ্রাচ্যে।

এপ্রিলে সিরিয়ায় থাকা ইরানি কনস্যুলেটে ইসরাইলি হামলার জবাব দিতে ৩০০ টিরও বেশি মিসাইল ও ড্রোন দিয়ে তেল আবিবকে লক্ষ্যবস্তু করে ওই মাসেই ট্রু প্রমিজ ওয়ান নামের অভিযান চালায় তেহরান। এরপর হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহসহ ইরানপন্থি বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হত্যার জেরে পহেলা অক্টোবর ট্রু প্রমিজ টু নামের অভিযানে ইসরাইলে প্রায় দু'শটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান।

২৬ অক্টোবর ইরানে চালানো ইসরাইলের বিমান হামলায় নিজেদের ৪ সেনা হারানোর পর আবারও প্রতিশোধের নেশায় জ্বলছে তেহরান। এবার ট্রু প্রমিজ থ্রি অভিযানের পথে হাঁটতে থাকায় ইরান-ইসরাইল উত্তেজনাও এখন তুঙ্গে। ইরানের আগের দুটি হামলার চেয়েও আসন্ন হামলাটি আরও শক্তিশালী হবে বলেও ধারণা বিশ্লেষকদের। কারণ সবশেষ ইসরাইলি শুধু সেনাদেরই হারায়নি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি গোপন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রও। তাই অস্তিতের প্রশ্নে ইরানের আসন্ন অভিযান ট্রু প্রমিজ থ্রি ভয়াবহ হবে বলে মত বিশ্লেষকদের।

সামরিক বিশ্লেষক আবদুল করিম খালাফ বলেন, ‘আমি মনে করি ইরানের আসন্ন প্রতিশোধমূলক হামলাটি ইসরাইলের সামরিক স্থাপনা এবং বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকাকে লক্ষ্যবস্তু করে চালানো হবে। যা আগের হামলাগুলোর চেয়ে কিছুটা শক্তিশালী হবে। এরপর যদি ইসরাইল আবার পাল্টা আক্রমণ করে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্য আরেকটি যুদ্ধ দেখবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’

ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের আগের প্রতিক্রিয়াগুলো ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস- আইআরজিসি দ্বারা পরিচালিত হলেও এবার তাদের সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীও যুক্ত হওয়ার আভাস মিলছে। অর্থাৎ দুই বাহিনীর আলাদা দ্বায়িত্ব থাকলেও ইসরাইলের বিরুদ্ধে এক সত্তা হয়ে অভিযান চালাতে যাচ্ছে আইআরজিসি ও ইরানি সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তবে গাজায় যদি ইসরাইল আগ্রাসন বন্ধ করে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের সব উত্তেজনাই থেমে যাবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

সামরিক বিশ্লেষক আবদুল করিম খালাফ বলেন, ‘ইসরাইল যদি তার অহংকারকে দূরে সরিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয় তাহলেই মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা কমবে। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমানোর জন্য এটি একমাত্র উপায়।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তায় ইসরাইল আগ্রাসন চালানোর সাহস দেখালেও, এসবের তোয়াক্কা করেনা ইরান। বরং তেহরানের স্যাটেলাইট ইমেজিং সক্ষমতা, ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন এবং রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক জোরদারের কারণে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন পশ্চিমারা।

উদ্বেগের বড় একটি কারণ হলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ১৫টিরও বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে ইরান। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি রাশিয়ার সহযোগিতা নিয়েছে দেশটি। এই স্যাটেলাইটগুলো কৃষি এবং গবেষণার মতো বেসামরিক উদ্দেশ্যে উৎক্ষেপণের দাবি করলেও, এর আড়ালে সামরিক প্রচেষ্টার কোনো কিছু যুক্ত থাকতে পারে বলে মনে করেন পশ্চিমারা। যার মাধ্যমে নজরদারি, সামরিক সক্ষমতা ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে তেহরান তার সক্ষমতা বাড়াচ্ছে বলে শঙ্কা রয়েছে।

ইএ