এশিয়া
বিদেশে এখন
0

বুথফেরত জরিপে ভুল, চমকে দিলেন হরিয়ানা রাজ্যের ভোটাররা

বুথফেরত জরিপ ভুল প্রমাণ করে চমকে দিয়েছেন ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ভোটাররা। তবে জম্মু কাশ্মীরে সরকার গঠন করতে পারলো না বিজেপি। কী বদল আসছে ভারতীয় রাজনীতির সমীকরণে? বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের চার মাসের মাথায় প্রথম দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেই ধারণা মিলবে, দেশটিতে সামনের দিনগুলোতে আঞ্চলিক রাজনীতি কোন পথে যাবে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশটিতে দুই মাসব্যাপী সাধারণ নির্বাচন শেষে গেলো জুন মাসেই টানা তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেয় হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার। চার মাসের মাথায় শুরু হয়েছে আঞ্চলিক নির্বাচন। সরকার গঠনের পর প্রথম বিধানসভা নির্বাচন বলে শুরু থেকেই ব্যাপক আলোচনায় ছিল হরিয়ানা আর জম্মু-কাশ্মীরের ভোট।

গত মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ফল প্রকাশের পরও থামেনি আলোচনা। কারণ গণনায় বুথফেরত জরিপ অপ্রত্যাশিতভাবে উল্টে গেছে দুই রাজ্যেই।

হরিয়ানায় বুথফেরত জরিপে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের জয়ের আভাস উল্টে দিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বহাল বিজেপি। অন্যদিকে বেশিরভাগ জরিপে আভাস ছিল, ২০১৯ সালে স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা বাতিলের পর এবং এক দশকের মধ্যে প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে ঝুলন্ত সরকার গঠন হতে পারে জম্মু-কাশ্মীরে। কিন্তু কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে প্রায় শতবর্ষী আঞ্চলিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স আর কংগ্রেসের জোট।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক শেখ শওকত বলেন, 'রাজ্যের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের ফলে বিদ্রোহী মনোভাব তৈরি হয়েছে মানুষের মধ্যে এবং তারা বিজেপিকে বাতিল করেছে।'

প্রতিবেশী ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের কারণে জম্মু-কাশ্মীরের নির্বাচন আলোচিত হলেও হরিয়ানা নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তেমন আলোচনা নেই। কিন্তু ভারতের রাজধানী দিল্লির ঠিক পাশে বলে ছোট্ট রাজ্য হরিয়ানার গুরুত্বও আঞ্চলিক রাজনীতিতে কম নয়। বিপুল ধান ও গম চাষের জন্য পাঞ্জাবের মতো হরিয়ানাও পরিচিত ভারতের 'রুটির ঝুড়ি' হিসেবে। সেই সাথে রাজ্যের গুরুগ্রাম শহরে আছে গুগল, ডেল, স্যামসাংয়ের মতো বহুজাতিক ব্র্যান্ডের কার্যালয়।

লোকসভা নির্বাচনের পর প্রথম দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেই ধারণা মিলবে, দেশটিতে সামনের দিনগুলোতে আঞ্চলিক রাজনীতি কোন পথে যাবে- মত বিশেষজ্ঞদের। যদিও হরিয়ানায় ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করেছে কংগ্রেস।

ভারত কংগ্রেস নেতা ও লোকসভা সদস্য শশী থারুর বলেন, 'হরিয়ানা প্রসঙ্গে আমি বলবো, এমন নয় যে আমরা বিস্মিত হইনি। এটা বিস্মিত হওয়ার মতোই ঘটনা। কারণ আক্ষরিক অর্থেই কয়েক বছর ধরে আমরা শুনে আসছি যে এ রাজ্যের মানুষ বিজেপি'র শাসনে কতোটা অসন্তুষ্ট এবং তারা কতো চাইছিল যে আমরা ক্ষমতায় আসি।'

ভারত বিজেপি নেতা ও লোকসভা সদস্য অনুরাগ ঠাকুর বলেন, 'লোকসভা নির্বাচনের পর এ নির্বাচন এলো। কাল থেকে যেভাবে বুথফেরত জরিপ দেখিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেসবকে ভুল প্রমাণ করে একতরফা রায় ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষেই দিয়েছে জনগণ।'

আগামী দুই মাসের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে জনসংখ্যায় ভারতের দ্বিতীয় বৃহৎ রাজ্য মহারাষ্ট্র এবং দিল্লিতে।

এফএস