রাঙামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ঝুলন্ত সেতু ঘিরেই। ১৯৬০ সালে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ নির্মাণের পর ১৯৮৫ সালে দুই পাহাড়ের মাঝখানে তৈরি করা হয় এই আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতুটি। তাই পর্যটকরা প্রথমেই ছুটে যান পর্যটন কমপ্লেক্স এলাকায়। বছরে প্রায় পাঁচ লাখের বেশি দেশি- বিদেশি পর্যটক সেতুটি দেখতে আসেন। এতে জনপ্রতি ২০ টাকা প্রবেশ ফি, গাড়ি পার্কিং ও ট্যুরিস্ট বোট ইজারা থেকে বছরে আয় আসে অন্তত আড়াই কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক সাহিদা বেগম বলেন, 'শুনেছিলাম সেতু ডুবে গেছে। কিন্তু এতদিন ডুবে থাকবে জানলে আসতামই না। পরিবারের সবাই এখন ডুবন্ত সেতু দেখে হতাশ হলাম। কর্তৃপক্ষ এটার স্থায়ী সমাধান করছে না কেন?'
পর্যটন নৌযান ঘাটের ট্যুরিস্ট বোট চালক রাকিব হোসেন বলেন, 'পর্যটক না আসায় দেড় শতাধিক ট্যুরিস্ট বোট চালক বেকার সময় পার করছেন। আয় না থাকায় মারাত্মক আর্থিক সংকট পড়েছে।'
পর্যটন নৌযান ঘাটের কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বলেন, 'গত জুলাই থেকে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে রাঙামাটিতে পর্যটক কম আসছেন। এরমধ্যেই ২৩ আগস্ট থেকে ঝুলন্ত সেতু ডুবে আছে। সবশেষ গত সপ্তাহে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, সাজেকে পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। সবমিলে পর্যটক শূন্য রাঙামাটি ক্ষতির মুখে পড়েছে।'
সেতুর টিকিট বিক্রয় কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা সোহেল খান জানান, ছুটির দিনগুলোতে পাঁচ হাজার থেকে ১০ বা ১২ হাজার পর্যন্ত পর্যটক সেতুটি ঘুরতে আসেন। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য এখন সেতু ভ্রমণ বন্ধ আছে।
রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানিয়েছেন, ২৩ আগস্ট থেকে বাণিজ্যিক টিকিট বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আয় বন্ধ থাকায় এখন দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে গড়ে ৭০ হাজার টাকার বেশি। পানি নেমে গেলে সেতু খুলে দেয়া হবে।
হ্রদের পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ ফিট মিনস সি লেভেল । কিন্তু বৃষ্টি হলেই পর্যটন সেতুসহ শহর এলাকায় হ্রদ তীরবর্তী বসতঘর ডুবে যায়। মূলত হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হচ্ছে।