বাড়ির ছাদ ছুঁয়েছে বানের পানি। জেলার পাঁচ উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় ডুবেছে ঘর-বসতি। নেই বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক। যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মানুষ।
বন্যা কবলিতরা সবচেয়ে বেশি অভাবে সুপেয় পানি ও খাবারের। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক ত্রাণ নিয়ে এলেও সেসবের সুষম বন্টন নিয়ে রয়েছে অভিযোগ ও অসন্তোষ। সমন্বয়হীনতা নিয়েও রয়েছে অভিযোগ।
এলাকাবাসীরা জানান, বিদ্যুৎ নেই। অনেক বাড়িতে খাবার নেই। পানির কষ্ট, স্যানিটেশন ব্যবস্থাও অপ্রতুল।
একজন জানান, একটা স্পিডবোটের ধারণক্ষমতা ১৫-১৬ জনের হলে ১৪ জনই উদ্ধারকারী। তাহলে কাকে উদ্ধার করবেন তারা। আরেক অধিবাসী জানান, এখানের বড় সমস্যা হচ্ছে অনেক ভলান্টিয়ার এখানে অবস্থান করছে। কিন্তু উদ্ধারের জন্য তাদের যে লজিস্টিকস সাপোর্ট তা জ্যামে আটকে আছে।
পানি কমতে শুরু করায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে বাড়ি ঘরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। দুর্গতরা জানান, এই মুহূর্তে শুকনো খাবারের চাইতেও রান্না করা খাবার ও ঔষধ প্রয়োজন মানুষের।
গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া আকস্মিক বন্যা শুরুতে আঘাত হানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য লাগোয়া ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরে। এখন পানি বাড়ছে সোনাগাজী ও দাগনভূঞাঁ এলাকায়।
জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্যমতে, ফেনীতে এই বন্যায় ৮ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধী রয়েছে। দেড় লক্ষাধিক মানুষকে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মুসাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, নিখোঁজ অথবা মৃতের সংখ্যা সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারছি না। তবে আমরা একজন মারা যাওয়ার তথ্য পেয়েছি। আমরা প্রতিটা উপজেলা, ইউনিয়ন থেকে শুরু করে গ্রামে ত্রাণ পৌঁছে দিতে চাই।
বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার ৬ উপজেলায় ৬টি ও জেলা সদরে একটি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। জেলা প্রশাসন থেকে ৬০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সেনাবাহিনী বিমান থেকে বিতরণ করেছে ৩৮ হাজার প্যাকেট।