মিত্র দেশ ইরান সফরে গিয়ে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া খুন হওয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে একের পর এক তথ্য সামনে আনছে। একইভাবে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরছে তেহরানও। কিন্তু হত্যার আসল রহস্য উদঘাটন হচ্ছে না কিছুতেই। দোষারোপ করা হলেও এই হত্যার ব্যাপারে এখনও দায় কাঁধে নেয়নি ইসরাইল। এতে সময় যতো যাচ্ছে ততই ঘোলাটে হচ্ছে হানিয়া হত্যা রহস্য।
বর্তমানে সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ ও ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা আইআরজিসি'র দেয়া তথ্য পার্থক্য আরও বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ ইরানের দুই কর্মকর্তার বরাতে সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, হানিয়াকে হত্যায় তেহরানের নিরাপত্তা এজেন্ট ভাড়া করেছিল ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। এমনকি যে অতিথি ভবনে হানিয়াকে হত্যা করা হয়েছে, ওই ভবনের তিনটি কক্ষে আগে থেকেই বোমা স্থাপন করে রেখেছিলেন তাঁরা। অন্যদিকে আইআরজিসি শনিবার জানায়, হানিয়া যে বাসভবনে ছিলেন তার বাইরে থেকে নিক্ষেপ করা করা হয়েছিলো ৭ কেজি ওজনের একটি স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। যা ইসরাইলের পূর্ব পরিকল্পিত এবং এটি মার্কিন সরকারের পূর্ণ সমর্থনে ঘটানো হয়েছে।
এমন তথ্য সামনে এনে খোদ আইআরজিসি'ই প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ তাদের মিত্র হওয়া সত্ত্বেও হামাসের রাজনৈতিক প্রধানের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে আইআরজিসি। অথচ তেহরানে হানিয়াকে নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্বও ছিলো তাদের ওপর। এতে ব্যর্থ হওয়ায় নিরবে অপরধবোধে গ্রাস করছে ইরানকে। তার প্রমাণও সামনে এসেছে, কারণ ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন আইআরজিসি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার ও বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া হানিয়ার গেস্টহাউসের স্টাফ সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তাদের ফোন এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ডিভাসই জব্দ করা হয়েছে। এমন খবর প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।
এতে বোঝা যায় যে, বেশ চাপে রয়েছে আইআরজিসি। হানিয়ার রক্তের প্রতিশোধ নেয়া হবে বলে একই সঙ্গে হুংকার দিচ্ছে ইরান ও তাদের সমর্থিত গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস, লেবাননের ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া এবং রাজনৈতিক দল হিজবুল্লাহ। এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে উত্তাপ। যে কোনো সময় অঞ্চলটিতে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরু শঙ্কা চরমে।