যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনায় জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের পতাকা
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের পতাকা | ছবি: সংগৃহীত
0

পরমাণু ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না ইরান। এবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। জবাবে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইরানের অধিকার। হুমকি-ধামকি বন্ধ করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা সম্ভব বলে জানিয়েছে তেহরান। দুই দেশের চলমান উত্তেজনায় প্রভাব পড়েছে জ্বালানি তেলের বাজারেও।

ওমানের মধ্যস্থতায় পরমাণু ইস্যু নিয়ে চার দফা আলোচনা করেও কোনো কূল কিনারা করতে পারেনি ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র। এরমধ্যেই দুই পক্ষ একে অপরকে হুমকিও দিয়ে যাচ্ছে নানা বিষয়ে। মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, পারমাণবিক চুক্তির খুব কাছাকাছি আছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানও শর্তাবলি মানতে সম্মত হয়েছে। যদিও ট্রাম্পের এমন দাবিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে তেহরান।

এবার ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানান, ইরানের সঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইরানকে এক শতাংশ ইউরেনিয়ামও সমৃদ্ধকরণের অনুমতি দেয়া হবে না।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুব স্পষ্টভাবে বলেছেন। সংঘাতে না গিয়ে কূটনৈতিকভাবে এবং সংলাপের মাধ্যমে সমাধান চান তিনি। সব ধরনের চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আরেকটি বিষয় খুব স্পষ্ট তা হল ইরানকে এক শতাংশ ইউরেনিয়ামও সমৃদ্ধকরণে অনুমতি দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রস্তাবে ইরানের সম্মান দেখিয়ে সমাধানের পথে আসা উচিত।’

জবাবে ইরান বলছে, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থেকে পিছু হটবে না তারা। এটি ইরানের বিরাট বৈজ্ঞানিক অর্জন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অবাস্তব পরিকল্পনা করছে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে দর কষাকষির সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘আমার মতে, উইটকফ আলোচনার বাস্তবতা থেকে অনেকটাই দূরে রয়েছেন। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখবে ইরান। তবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে আগ্রহী না তেহরান। চুক্তির বিষয়ে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে অবাস্তব প্রত্যাশা পূরণ করতে দেয়া হবে না।’

এদিকে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ইরানি প্রেসিডেন্ট জানান, যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দেয়া বন্ধ করলেই কেবল চুক্তিতে আসা সম্ভব। পেজেশকিয়ান জোর দিয়ে বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র কখনই চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বাড়াতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন দুই নেতা।

এদিকে দুই পক্ষের চলমান উত্তেজনার জেরে জ্বালানি তেলের দামেও প্রভাব পড়েছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম তিন সেন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ৫২ মার্কিন ডলারে। এমন অবস্থায় ইরান-মার্কিন পারমাণবিক আলোচনার ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছেন বিনিয়োগকারীরা।

এসএস